বর্তমানে বাংলাদেশ ফ্রীল্যান্সিং সেক্টরের সব থেকে জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী একটি দেশ । যতদিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে তত বাংলাদেশীদের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি এবং বেসরকারি জব এর তুলনায় ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে বেশি পরিমাণে সুবিধা এবং ইনকাম করা সম্ভাবনা রয়েছে এ কারণেই ফ্রিল্যান্সিং কে নতুনরা বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে।
এই ক্রম বর্ধমান অবস্থায় একটি কমন প্রশ্ন চলে আসে যে বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা কত? মূলত এক্সাক্ট সংখ্যা নিশ্চিত বলা অসম্ভব। তবে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেস ও সরকারের তথ্য অনুযায়ী যে পরিসংখ্যান রয়েছে আমি তা আপনাদের সামনে আজকে এই আর্টিকেলে উন্মুক্ত করব।
আজকের এই আর্টিকেলে মূলত আমরা আলোচনা করব বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা কত, কেন ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে, ফ্রিল্যান্সিং এর কোন কাজগুলো বেশি করেছে, বাংলাদেশীরা ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি সুবিধা এবং সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও আমরা আলোচনা করব ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কি একটি ভালো ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব কিনা এবং ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ নিয়েও আমরা আলোচনা করব।
এছাড়াও বর্তমানে আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান কত তম বিশ্বব্যাপী সেই সম্পর্কেও আমরা আলোচনা করব। মূলত এই আর্টিকেল আপনি মনোযোগ সহকারে পড়লে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে আপনার অনেক বিষয় ক্লিয়ার হয়ে যাবেন এবং নতুন নতুন কিছু শিখতে পারবেন।
ফাইনালি আমি কিছু টিপস দেয়ার চেষ্টা করব যেন আপনারা সেগুলো কাজে লাগিয়ে আরো ভালো কিছু করতে পারেন। তাহলে চলুন অতিরিক্ত কথা না বলে আজকের মেইন আর্টিকেল আমরা শুরু করি।
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা কত?
বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা কত তা বলা খুবই মুশকিল। কারণ বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে এমন হয়ে গিয়েছে যে কেউ যদি ফ্রিল্যান্সিং করে সেই তথ্য সরকারের কাছে নেই। তবুও অনলাইন সার্ভে এবং সরকারের কিছু তথ্য এবং বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে আমরা একটি আনুমানিক সংখ্যা পেতে পারি।
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালের বর্তমান রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজারের অধিক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। যাদের মধ্যে ৫ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার নিয়মিত কাজ করে থাকে। মূলত এই রিপোর্টটি বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশ করা হয়, ২০১৯ সালের রিপোর্টের সাথে বর্তমানের রিপোর্ট এর কোন পার্থক্য হয়নি।
যেখানে ২০১৯ সালে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা দেখানো হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার সেই সংখ্যা বর্তমানেও একই দেখানো হয়েছে। এর মানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে সরকার পরবর্তীতে আর কোন নতুন পরিসংখ্যান যুক্ত করেনি, এখনও পূর্বের রিপোর্ট দিয়ে এখনো কাজ চালাচ্ছে।
তবে বাংলাদেশ ফ্রীলান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি অর্থাৎ BFDS এর তথ্য অনুসারে বাংলাদেশে অন্তত সাড়ে 10 লক্ষ ফ্রীলান্সার রয়েছে যারা নিয়মিত কাজ করে থাকে। এই রিপোর্টগুলো খুব একটা গ্রহণযোগ্য না হলেও কিছুটা আভাস পাওয়া যায় যে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা প্রায় ১ মিলিয়ন অর্থাৎ ১০ লাখের কাছাকাছি বা এর বেশি।
Upwork এর তথ্য অনুসারে শুধুমাত্র এই মার্কেটপ্লেস এ প্রায় ৮ লক্ষের অধিক বাংলাদেশী প্রোফাইল রয়েছে। এখন যদি শুধুমাত্র আমরা up work এর রিপোর্ট টাই পর্যালোচনা করি তাহলেই বুঝতে পারবো যে বাংলাদেশে প্রায় ৮ লক্ষের অধিক ফ্রীলান্সার রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে সব থেকে ফ্রিল্যান্সার কাজ করে ফাইভার মার্কেটপ্লেসে। সুতরাং ওই মার্কেটপ্লেসে হয়তো আরও বেশি সংখ্যায় ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। (নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে জানুন)
তবে বাস্তবে যে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা কত তা কখনোই বলা সম্ভব নয়। ফ্রিল্যান্সিং মূলত মুক্তপেশাকে বলা হয়ে থাকে। এখন যারা ব্লগিং, ইউটিউবিং কিংবা ছোট খাটো কাজ করে থাকে অনলাইনে সেক্ষেত্রে তাদেরকেও ফ্রিল্যান্সার বলা উচিত।
যদি এই ধরনের পেশা গুলোকেও অর্থাৎ ব্লগিং, ইউটিউবিং এর মত সেক্টরগুলো কেউ ধরা হয় তাহলে বাস্তবে কি ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা বলা অসম্ভব। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার সংখ্যা কত মূলত সেটার সঠিক তথ্য প্রদান করা অসম্ভব।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার অ্যাসোসিয়েশনের মতে করোনাভাইরাসের পর থেকে এই সংখ্যা আরো ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে সেটা অনেক জনের কাছেই অজানা। মূলত বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেগুলো আমরা একটু সার্বিক ধারণা নেয়ার চেষ্টা করব;
১. ইন্টারনেট ব্যবহারে সহজলভ্যতা:
পূর্বে যখন কেউ ফ্রিল্যান্সিং করতে যেত তখন তাকে নানা ধরনের প্রবলেম ফেস করতে হতো। বিশেষ করে ইন্টারনেট সমস্যাটা সবথেকে বেশি ভুগিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং খুব সহজেই ব্যবহার উপযোগী হওয়ায় ফ্রিল্যান্সাররা পূর্বের তুলনায় আরো সহজে এবং স্মুথলি কাজ করতে পারছে। এছাড়াও যখন সবাই ইন্টারনেটে ব্রাউজিং করতেছে তখন ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টা অনেক জনই গুরুত্ব সহকারে দেখতেছে, এবং এর সুবিধা গুলো দেখে ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে।
২. কাজের অভাব:
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্র দিনে দিনে কমে আসতেছে। বিশেষ করে প্রথাগত সরকারি চাকরি এবং বেসরকারি চাকরির দিকে একটি অনিহার সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশে বর্তমানে একপ্রকার নিরব দুর্ভিক্ষ চলতেছে সেক্ষেত্রে সামান্য চাকরি করে আর আগের মত ভালো ভাবে জীবন যাপন করা যাচ্ছে না।
যার কারণে অনেকজন অতিরিক্ত ইনকামের আশায় ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হচ্ছে। মূলত এই কারণটি ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এছাড়াও বাংলাদেশ বেসরকারি এবং সরকারি খাতে ব্যাপক দুর্নীতির কারণে ও অনেক জন ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। উচ্চ ইনকামের আশায় এবং একটি ভালো জীবন যাপনের উদ্দেশ্যে ফ্রিল্যান্সিং মূলত মধ্যম আয়ের মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।
৩. সহযোগিতা বৃদ্ধি:
বর্তমানে অনলাইনে অনেক ধরনের সাপোর্ট সিস্টেম তৈরি করা হচ্ছে যার মাধ্যমে খুব সহজেই নতুন ফ্রিল্যান্সারা তাদের নতুন সমস্যা গুলোকে কভার করা শিখতে পারতেছে। আগে ফ্রিল্যান্সিং করতে এলে তাদের প্রাথমিক সমস্যাগুলো খুবই ব্যাপকভাবে তাদেরকে ডিমটিভেট করত কাজগুলো করতে।
কিন্তু এখন ফেসবুক, ইউটিউব থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারতাছে। যার কারণে নতুন নতুন বিষয় শিখতে পারতেছে এবং সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে আরো বেশি পরিমাণে স্কিল ডেভেলপ করতে পারতেছে।
৪. অধিক জনসংখ্যা:
বাংলাদেশ যেহেতু জনসংখ্যার দিক থেকে একটি অনেক বৃহত্তম দেশ সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে অনেক মানুষ তাদের কাজের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। যেহেতু বাংলাদেশ এ বর্তমানে 16 কোটির অধিক জনসংখ্যা রয়েছে, সেখান থেকে যদি ১% এর দিকে আসে তাহলে সেক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা দাঁড়াবে 16 লক্ষের অধিক। মূলত যখন কোন ফ্রিল্যান্সার একটি সফল ক্যারিয়ার করতে পারে তখন সে অন্য কেউ এই কাজের প্রতি আহ্বান করে যার ফলে নতুনরা এই বিষয়ে আরও হয়।
৫. ফ্রিল্যান্সিং কেয়ার:
বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাপক আকারে আইটি ট্রেনিং সেন্টার এবং ফ্রিল্যান্সিং কোর্স প্রোভাইডার এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে সবার কাছে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টা আরো ক্লিয়ার হয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের আইটি ট্রেনিং সেন্টার থেকে যখন কেউ কোর্স করতেছে এবং সেগুলো কাজে লাগিয়ে ইনকাম করতেছে, তখন অন্যরাও এর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
মূলত ফ্রিল্যান্সিং সেন্টার গুলো কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হয় সেই বিষয়ে থেকে শুরু করে যাবতীয় বিষয়গুলো ক্লিয়ার করে দিচ্ছে এবং স্কিল ডেভলপ করতে সাহায্য করতেছে। যা ফ্রিল্যান্সিং জনপ্রিয়তা পাওয়ার একটি অন্যতম কারণ। তবে বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশ এ আইটি সেন্টার থেকে তাবিজ বিক্রেতার সংখ্যা বেশি।
এক্ষেত্রে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান সেক্ষেত্রে একটি সঠিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স করার চেষ্টা করবেন। যেন সেখান থেকে আপনি সার্বিক সহযোগিতা এবং ইনকামের গ্যারান্টি পেতে পারেন।
৬. পেশা নির্বাচন:
বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষেরা স্বাধীন পেশা বেছে নিতে বেশি আগ্রহী। কারো আন্ডারে কাজ করা কিংবা নির্দিষ্ট একটি সেক্টরে সারা জীবন ধরে কাজ করা অনেকের কাছে একঘেয়েমি লাগতেছে। প্রথাগত চাকরির বদলে মন মোতাবেক কাজ করার সুবিধা থাকাই ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে আরো বেশি পরিমাণে মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছে বলে বাংলাদেশ সরকারের রিপোর্টে জানানো হয়ে থাকে। সুতরাং মুক্ত পেশার আশায় অনেক জন ফ্রিল্যান্সিং এ যুক্ত হচ্ছে। আর এই সংখ্যা মূলত উচ্চশিক্ষিত স্টুডেন্ট এর মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
৭. ডিজিটালাইজেশন:
বাংলাদেশ যেহেতু বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর হচ্ছে। বর্তমানে সমস্ত ধরনের কাজ অনলাইনের মাধ্যমেই করা হয়ে থাকে চাকরির এপ্লাই থেকে শুরু করে পড়ালেখা সবকিছুতেই এখন অনলাইনের ছোঁয়া লেগেছে। এখান থেকে অনেকেই তাদের স্কিল গুলোকে কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার চেষ্টা করতেছে। যার কারণে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা আগে তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মূলত উপরের কারণগুলো আমি বিভিন্ন রিসোর্স এবং রিপোর্টের মাধ্যমে সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি। এগুলো ছাড়াও আরো অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে, তবে এই কারণগুলো মুখ্য। তুলনামূলক অনলাইন কাজে সুবিধা থাকার কারণে এবং উচ্চ ইনকামের সম্ভাবনা থাকার কারণে মূলত ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে মানুষ বেশি ঝুঁকছে।
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা কোন ধরনের কাজ বেশি করে?
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা মূলত সব ধরনের কাজের সাথে সম্পর্কিত রয়েছে। এক-একজন ফ্রিল্যান্সার এক-একটি সেক্টরে কাজ করে। যেহেতু বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা অনেক বেশি সেক্ষেত্রে সব সেক্টরেই ফ্রিল্যান্সারের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তবে যদি আমরা একটি সার্বিক দিক বিবেচনা করে দেখি তাহলে আমাদের কাছে একটি রিপোর্ট দাঁড়ায় যে কোন কাজগুলো বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা মূলত বেশি করে থাকে।
তবে পূর্বেই বলে রাখতেছি যে এটা অনলাইন থেকে প্রাপ্ত ডাটা এবং আমার নিজস্ব একটি পরিসংখ্যান। তবে আমি অনেক বড় বড় ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তি এবং facebook গ্রুপের এডমিনের সাথে কথা বলে রিপোর্টটা তৈরি করেছি। যার মধ্যে রয়েছে ফ্রিল্যান্সার অফ বাংলাদেশের কয়েকজন এডমিন এবং মডারেটর। তাহলে চলুন জেনে নেই বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা মূলত কোন ধরনের কাজ বেশি করে থাকে:
১. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট:
বর্তমানে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টর টা অনেক পপুলার এবং ইনকাম করার জন্য আদর্শ একটি সেক্টর। তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে গেলে অনেক কষ্ট এবং সময় ব্যয় করতে হয়। বর্তমানে সমস্ত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে শুরু করে লোকাল মার্কেটেও এই কাজের চাহিদা প্রবল।
২. গ্রাফিক্স ডিজাইনার:
গ্রাফিক্স ডিজাইনার এর সংখ্যা বাংলাদেশি প্রায় অনেক। গ্রাফিক্স ডিজাইন মূলত একটি শখের পেশা, যারা ছবি অ্যার্ট করতে পছন্দ করে কিংবা নতুন নতুন ইমেজ নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করে তারা মূলত এই সেক্টরটাতে কাজ করে। গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা সব সময় অনেক বেশি তবে তুলনামূলক ইনকাম কম।
৩. এসইও:
এসইও অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, বর্তমান সময়ে এই এসইও সেক্টর টা খুবই ভালো চলতেছে। বর্তমানে সবাই নিজেদের ওয়েবসাইটকে গুগলের টপ পজিশনে রাখতে চায় এইজন্য তাদের seo এক্সপার্টদেরকে হায়ার করতে হয়। সেক্ষেত্রে এসইও এক্সপার্টদের চাহিদা খুবই বেশি, বিশেষ করে বহির্বিশ্বে। এই সেক্টরের চাহিদা এবং ইনকামের পরিমাণ অনেক বেশি বর্তমানে বাংলাদেশেও এই কাজের চাহিদা অনেকাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৪. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং:
সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে এখন তাদের ব্যবসা গুলোকে পরিচালনা করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে নিয়ে আসতেছে। যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়াতে সব ধরনের মানুষ বেশি সময় ধরে থাকে সেক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর সোশ্যাল মিডিয়া এক্সপার্টদের হায়ার করতেছে। তুলনামূলক এই সেক্টরে কাজের চাহিদা অনেক অনেক বেশি এবং এর পাশাপাশি ইনকামের সম্ভাব্যতা অনেক বেশি।
৫. পিপিসি বা পেইড এডভার্টাইজিং:
google অ্যাডস, ফেসবুক অ্যাড, microsoft অ্যাড থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের পেইড অ্যাডভার্টাইজিং করানোর জন্য পিপিসি এক্সপার্ট এর ডিমান্ড অনেক ক্ষেত্রেই বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে যারা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোকে নিয়ে কাজ করতেছেন, তাদের জন্য এই সেক্টর টা অনেক লাভজনক।
তবে এই সেক্টরে নিয়ে কাজ করতে হলে অবশ্যই ভালো পরিমাণে জ্ঞান রাখতে হবে এবং বেসিক নলেজ গুলো তুলনামূলক ভালো রাখতে হবে। কেননা এখানে সামান্য ভুল হলেই অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে কোম্পানির।
৬. মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট:
বর্তমানে মোবাইল অ্যাপ ডিভলপমেন্ট সেক্টর টা খুবই ট্রেন্ডিং চলতেছে। যেহেতু অনলাইন ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৬৫% মোবাইল ব্যবহারকারী এজন্য সবাই তাদের প্রোডাক্ট সার্ভিসগুলোকে মোবাইল ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছে দিতে চাচ্ছে। এক্ষেত্রে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে যারা কাজ করে তাদের চাহিদা খুবই বেড়ে গিয়েছে এবং এই সেক্টরে খুব বেশি পরিমাণে আয় করা সম্ভব।
৭. কনটেন্ট রাইটিং:
যারা মূলত লেখালেখি পছন্দ করে এবং তাদের লেখাগুলোকে বিক্রি করে ইনকাম করতে চায় তারা মূলত কনটেন্ট রাইটিং নিয়ে কাজ শুরু করে দিতে পারেন। বর্তমানে কন্টেন্ট রাইটারদের সংখ্যা তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বেশিরভাগ কন্টেন্ট রাইটার ভুল পদ্ধতি অবলম্বন করে কন্টেন্ট লিখতেছে।
তবে আপনি যদি এই বিষয়ে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি অনেক বেশি পরিমাণে আয় করতে পারবেন এবং একটি ভবিষ্যৎ পর্যন্ত গড়ে তোলা সম্ভব এখান থেকে। তবে কনটেন্ট রাইটিং সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা রাখতে হবে এবং নতুন নতুন বিষয়গুলোকে নিয়ে নতুন ভাবে চিন্তা করতে হবে।
৮. ভিডিও এডিটিং:
বলা হচ্ছে যে বর্তমানে যে সেক্টর গুলো সব থেকে বেশি অগ্রগতি লাভ করতেছে তাদের মধ্যে একটি অন্যতম হলো ভিডিও এডিটিং। এখন সমস্ত প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির সবাই তাদের ভিডিওগুলোকে প্রফেশনাল ভাবে youtube এ কিংবা প্রোডাক্ট প্রমোশনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিটরদের প্রয়োজন হচ্ছে। এক্ষেত্রে বর্তমানে ভিডিও এডিটরদের চাহিদা অনেক বেশি এবং এটি একটি সফল ক্যারিয়ার তৈরি করতে সহযোগিতা করতে পারে ।
৯. ওয়ার্ডপ্রেস স্পেশালিস্ট:
রিপোর্ট অনুসারে ১০০ জন ওয়েবসাইটের মালিকের মধ্যে প্রায় ৩৯.২% মানুষ এই ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখেন এবং সমস্ত বিষয় সম্পর্কে সমাধান দিতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস স্পেশালিস্ট হয়েও অনেক ভালো একটি ক্যারিয়ার বিল্ড আপ করতে পারবেন। এই সেক্টরে ইনকাম এর সম্ভাবনা তুলনামূলক অন্যান্য সেক্টর গুলার থেকে প্রায় তিন থেকে চার গুণ বেশি। তবে এই সেক্টরে কাজের চাপ ও অনেক বেশি।
১০. ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট:
যারা ইংরেজি ভাষায় দক্ষ তারা মূলত এই সেক্টরে বেশি আগ্রহী হচ্ছে। যেহেতু ইংরেজি ভাষার ক্লায়েন্ট পাওয়া খুবই সহজ এবং এখানে খুব বড় কাজ করতে হয় না শুধুমাত্র ক্লায়েন্টের ছোটখাট কাজগুলো করতে হয়। এজন্য এই সেক্টরটাও অনেক উন্নত হচ্ছে এবং কাজের পরিধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো এই ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্টের কাজের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।
মূলত এই দশটি কাজের দিকে ফ্রিল্যান্সাররা বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। আর এই ধরনের কাজগুলো মার্কেটে অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে যা ভবিষ্যতে একটি ভালো ক্যারিয়ার গঠনের সাহায্য করতে পারে। তবে এগুলো ছাড়া আরো অনেক অনেক ফ্রিল্যান্সিং স্কিল রয়েছে যেগুলো আপনারা চাইলে তৈরি করে সেল করতে পারেন।
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা প্রতি বছর কত আয় করে?
আপনাদের মধ্যে অনেকজনের প্রশ্ন করেন যে, বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা প্রতিবছর কত টাকা আয় করে। একটা জিনিস মাথায় রাখবেন যে, সমস্ত ফ্রিল্যান্সার এর ইনকাম সামান নয়। বাংলাদেশের জিডিপিতে ২০২১-২২ সালে ফ্রিল্যান্সারের অবদান ছিল ১০ হাজার কোটি টাকার উপরে। এটা শুধুমাত্র লিগ্যাল ওয়েতে যদি আপনি ইললিগ্যাল ওয়েতে যান সে ক্ষেত্রে আরো বেশি হতে পারে। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের পরিমাণ তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের টাইপ রিলেটেড বিষয়ের উপর ডিপেন্ড করে।
সাধারণত বিভিন্ন তথ্য অনুসারে একজন মধ্যম মানের ফ্রিল্যান্সার ঘরে 500 থেকে 5000 ডলার পর্যন্ত ইনকাম করে থাকে। তবে কিছু কিছু ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা আরো বেশি অভিজ্ঞ এবং স্কিল সম্পূর্ণ তারা আরো বেশি ইনকাম করে থাকে। আবার অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা নতুন তাদের ইনকাম সামান্য। সেটা ১০০ ডলারের উপরেও যেতে পারে আবার কখনো কখনো তার নিচেও আসতে পারে।
তবে ধীরে ধীরে যখন মার্কেটপ্লেসে একজন ফ্রিল্যান্সার সেটেল হয়ে যায় তখন তার ইনকামের পরিধি সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তবে যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ডিজিটাল মার্কেটার ও কপিরাইটার সেক্টরের কাজ করে তাদের ইনকাম একটু তুলনামূলক হলেও বেশি। ( ফ্রিল্যান্সিং-এর টাকা পাওয়ার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম কোনটি? এই সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানুন)
আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান ২০২৪
আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ অনেক পাওয়ার ফুল একটি দেশ। তবে আউটসোর্সিং এর দিক থেকে বিশ্ব র্যাংকিং এ বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান কত? পেওনিয়ার ও গ্লোবাল ইকনোমিক ইনডেক্সের তথ্য অনুসারে আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ৮ম।
তবে এই রিপোর্টটা ২০১৯ সালে তৈরি করা হলেও পরবর্তীতে এই রিপোর্টের মধ্যে পরিবর্তন করা হয়নি। যেহেতু বাংলাদেশের অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার করোনা কালীন সময়ে বেশিরভাগ যুক্ত হয়েছেন ২০২১ সালের কাছাকাছি সময়ে।
সেক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশের হয়তো আউটসোর্সিং এ আরো টপ পজিশনে থাকতে পারে। তবে বলা যেতে পারে ২০২১ ও ২০২২ সালে আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান ছিল অষ্টম। বর্তমানে যেখানে পাকিস্তানের আউটসোর্সিং পজিশন চতুর্থতম এবং আউটসোর্সিং এ ভারতের অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সিং সোসাইটির সংখ্যা পাওয়া গিয়েছে ভবিষ্যতে যখন আসবে তখন বাংলাদেশ আরও ভালো অবস্থানে থাকবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশা করেন।
ফ্রিল্যান্সিং কি একটি ভালো ক্যারিয়ার?
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অবশ্যই একটি ভালো ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব। ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের যেমন সুবিধা রয়েছে এর পাশাপাশি অনেকগুলো অসুবিধা রয়েছে। আপনি সার্বিক দিক বিবেচনা করে ফ্রিল্যান্সিং আপনার উপযুক্ত কিনা সেটা যাচাই করে নিতে ভুলবেন না। সবার জন্য ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার করা সম্ভব নয় এখানে অনেকগুলো ভালো দিক রয়েছে ও এর পাশাপাশি অনেক খারাপ দিক রয়েছে।
ফ্রিল্যান্সিং কে একটি ভালো ক্যারিয়ার হিসাবে নেয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত দক্ষতা এবং এক্সপেরিয়েন্স অর্জন করতে হবে। এর পাশাপাশি ধৈর্য ধরে কাজ করে যেতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ধৈর্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনার জন্য সঠিক কিনা সেটা জানার পূর্বে আমরা ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা অসুবিধাগুলো একটু জেনে আসা চেষ্টা করুন ।
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা
১. স্বাধীন পেশা নির্বাচন:
ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে বড় একটি সুবিধা হল যে কোন স্বাধীন পেশা নির্বাচন। আপনি আপনার পছন্দমত যে কোন একটি বিষয় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে দিতে পারবেন। আপনার যে বিষয়ে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে অথবা দক্ষতা রয়েছে আপনি চাইলে সেই বিষয় নিয়েই কাজ শুরু করে দিতে পারেন। মূলত বেশিরভাগ জন স্বাধীন পেশা নির্বাচনের জন্যই ফ্রিল্যান্সিংকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
২. বেশি আয়ের সম্ভাবনা:
সরকারি চাকরি কিংবা বেসরকারি চাকরির তুলনায় ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনেক বেশি পরিমাণে আয় করা সম্ভব। এখানে নির্দিষ্ট কোন বেতন স্কেল নেই। আপনার স্কিল ও এক্সপেরিয়েন্স কে কাজে লাগিয়ে মাসের লক্ষ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। আপনি যত বেশি কাজ করবেন এখানে তত বেশি আয় করা সম্ভবনা রয়েছে।
৩. ওয়ার্ল্ড ওয়াইড কাজ করার সম্ভাবনা:
আপনি পুরো বিশ্বের যে কোন প্রান্তের কাজ করে দিতে পারবেন। নতুন নতুন ক্লাইন্ট এবং নতুন নতুন সংস্কৃতির সাথে আপনার পরিচয় ঘটবে। এছাড়া ভালো ক্লাইন্ট এর সাথে কাজ করতে পারলে পার্মানেন্ট জব এর মত সুবিধা দিতে পারেন।
৪. প্রোফাইল বিল্ড আপ করার অপরচুনিটি:
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার একটি প্রোফাইল তৈরি করতে পারবেন। সম্মানের সাথে বিভিন্ন স্থানে চলাফেরা করতে পারবেন। সবার সামনে আপনার এক্সপেরিয়েন্স, স্কিল সহ আরো অন্যান্য বিষয়গুলো ছড়িয়ে দিতে পারবেন।
এগুলো মূলত কয়েকটি বেসিক সুবিধা। এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং এর আরো অনেক অনেক সুবিধা রয়েছে।
ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা
প্রত্যেকটি কাজের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও থেকে যায়। ঠিক এমনই ভাবে ফ্রিল্যান্সিং এর অনেকগুলো সুবিধা থাকার সাথে সাথে এর অনেকগুলো অসুবিধা রয়েছে। যেগুলো ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার পূর্বেই আপনাকে জেনে নেয়া উচিত।
১. অনির্দিষ্ট আয়:
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনেক ইনকাম করা গেলেও কখনো কখনো এমনও সময় আসে যখন কোন প্রকার ইনকাম হয় না। সহজে বলতে গেলে ফ্রিল্যান্সিং এর কোন নির্দিষ্ট আয় করার সুবিধা নেই। কখনো কখনো এমন সময় আসে যে ২-৩ মাস পর্যন্ত কোনো প্রকার কাজ পাওয়া যায় না বিশেষ করে প্রাথমিক অবস্থায়।
২. স্বাস্থ্য সমস্যা:
ফ্রিল্যান্সারদের সব সময় স্বাস্থ্য সমস্যা থেকেই যায়। যেহেতু ফ্রিল্যান্সার রা সব সময় কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে তাদের চোখের সমস্যা থেকে শুরু করে মানসিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। এছাড়াও বাইরে খেলাধুলার সব এরকম পাওয়ার কারণ নেই একাকীত্ববোধ অনুভব হয়। ফ্রিল্যান্সিং এর এটি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অসুবিধা।
৩. কম্পিটিশন:
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে শুরু করে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর বাইরে এখন প্রচুর পরিমাণে কম্পিটিশন তৈরি হয়েছে। যার ফলে আগের তুলনায় কাজের সংখ্যা একই থাকলেও কর্মজীবীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে অর্থাৎ আগের তুলনায় কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে।
৪. স্ক্যাম:
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সাররা নানা ধরনের প্রতারণার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। যার ফলে অনেক সময় ধরে কাজ করলেও যথাযথ মূল্য পাচ্ছে না। অনেক সময় টাকা না দিয়েই ক্লাইন্ট চলে যায়। একপ্রকার অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে কাজ করে দিতে হয়।
এই অসুবিধাগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের অসুবিধা রয়েছে।
উপসংহার
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান আকারে বাড়তেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বাংলাদেশে তুলনামূলক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সারদের আয় এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলক উন্নত হচ্ছে। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা নিয়ে অনেক জনের অনেক মতামত থাকলেও এটি নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা বলা অসম্ভব।
তবে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সিং ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির তথ্য মতে আমরা কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যা জানতে পেরেছি যে সম্ভবত বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ৬ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষের কাছাকাছি। প্রকৃতপক্ষে এর সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে।
বর্তমানে আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান প্রায় অষ্টম তম। যা ভবিষ্যতে আরো উন্নত হবে বলে আমরা আশা করি। এছাড়া ফ্রিল্যান্সারদের ইনকাম আরবের বছরের তুলনায় এখন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন একজন মধ্যমানের ফ্রিল্যান্সার মাসে ৫০০০০ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারতেছে।
এগুলো ছাড়াও বর্তমান প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল মার্কেটিং,গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মতো সেক্টর গুলোতে কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ফ্রিল্যান্সাররা এই কাজগুলো একটু বেশি মনোনিবেশ করতেছে।
আজকের আর্টিকেলে আমরা ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা কত, ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশে কেন জনপ্রিয় হচ্ছে এ বিষয়গুলোকে ক্লিয়ার করেছি। এর পাশাপাশি কোন কাজগুলো বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার রা বেশি করতেছে এই মুহূর্তে ও তাদের মাসিক ইনকাম সম্পর্কে একটি সার্বিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান কত তা সম্পর্কেও সামান্য অবগত করার চেষ্টা করেছি।
আশা করি এই আর্টিকেল থেকে আপনারা অবশ্যই কিছু তথ্য পেয়েছেন। যদি এখনো কোন প্রকার প্রশ্ন কিংবা মতামত দেয়ার থাকে এই আর্টিকেলের উপর তাহলে অবশ্যই কমেন্ট জানাতে পারেন। তো আজকের এই আর্টিকেল এই পর্যন্তই, যদি আপনাদের স্পেশাল কোন আর্টিকেল প্রয়োজন হয় কোন বিষয়ের উপর তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথে কন্টাক্ট করতে পারেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.