সাম্প্রতিক বছরগুলোর পরিসংখ্যান দেখলে আমরা বুঝতে পারি যে বর্তমানে ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেস করা একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের মতে গত এক যুগের মধ্যে ব্যবসার প্রসার ঘটেছে প্রায় ৪৫% পর্যন্ত।
কিন্তু বর্তমান যুগ ডিজিটালাইজ হওয়ার ফলে অফলাইন বিজনেসের সাথে সাথে অনলাইন বিজনেস গুলো খুব ভালো চলতেছে। আমরা জানি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর মধ্যে ফেসবুক সবথেকে জনপ্রিয় সেক্ষেত্রে ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেস করা একটি লাভজনক উপায় হতে পারে।
কিন্তু এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যায় সেটি হল যে, কোন বিজনেস গুলো ফেসবুকের মাধ্যমে করলে সফলতা আসার সম্ভাবনা বেশি। যেহেতু সকল প্রকার বিজনেস করা সবার জন্য সম্ভব নয়। বিশেষ করে যারা নতুন কোন প্রকার জ্ঞান নেই।
এইজন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব ফেসবুকের মাধ্যমে করা যেতে পারে এমন ১০টি জিনিস আইডিয়া সম্পর্কে। যেই বিজনেস গুলো খুব ভালো এবং লাভজনক এর পাশাপাশি যে কেউ করতে পারবে।
সুতরাং আপনারা যারা ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেস করতে চান তারা সম্পূর্ণ আর্টিকেল কে ভালোভাবে সহকারে পড়বেন। আমি প্রত্যেকটি বিষয়কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব ও বিজনেস সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো টিপস এবং কিভাবে সফল হবেন এই বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেয়ার চেষ্টা করব।
কিন্তু facebook এর মাধ্যমে বিজনেস করার পূর্বে ফেসবুক বিজনেস পেজ তৈরি করে নিতে হবে। পূর্বের আর্টিকেলে আমি আলোচনা করেছিলাম কিভাবে আপনি ফেসবুক ব্যবহার করে একটি প্রফেশনাল বিজনেস পেজ ক্রিয়েট করবেন।
সুতরাং আপনারা চাইলে এই আর্টিকেলটা আগে পড়ে আসতে পারেন। তারপর এই আর্টিকেলটা পড়া শুরু করতে পারেন তাহলে অনেক বিষয়ে প্রথমে ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেস কিভাবে শুরু করব ২০২৩
Facebook সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর সব মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয়। দৈনিক প্রায় ৩৫০ কোটির অধিক মানুষ ফেসবুকে একটিভ থাকে। বাংলাদেশের প্রায় ১২ কোটির অধিক ইউজার নিয়মিত দেখতে ফেসবুক পরিচালনা করেন। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৯ কোটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং বাংলাদেশীদের মধ্যে অনেকজন রয়েছে যারা ফেসবুক ব্যবহার করে তাদের সময় অতিবাহিত করতেছে। কিন্তু ফেসবুক বর্তমানে শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এটি এখন বিজনেস করার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে যা আমি পূর্বের ক্লিয়ার করেছি।
ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেস করতে হলে অবশ্যই পরিশ্রম এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে তাহলেই আপনি সফল হতে পারবেন। বর্তমানে শুধুমাত্র বিজনেস শুরু করলেই হবে না সেখানে বিজনেসকে সার্ভাইব ও করতে হবে। এজন্য প্রথমে আপনার ধৈর্য এবং পরিশ্রমের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ফেসবুকে বিজনেস শুরু করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট সাব্জেক্ট নিয়ে কাজ করা শুরু করতে হবে। আপনি যে বিষয়ে সম্পর্কে ভালো জানেন এবং ভবিষ্যতে ভালো কিছু সম্ভাবনা দেখেন সেই বিষয় নিয়ে এই কাজ করা উত্তম হবে।
কিন্তু সার্বিক দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে শুধুমাত্র পছন্দ এবং জানা থাকলে এসব বিজনেসের সফল হওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু বর্তমানে এমন কয়েকটি বিজনেস খুব ভালো চলতেছে যা ভবিষ্যতে আরো ভালো আকার ধারণ করবে। যদি এখন থেকেই এর জন্য ভালো প্রস্তুতি নেয়া যায়।
যখন আপনি ফেসবুক বিজনেস আইডিয়া নির্বাচন করে নিবেন, তখন সেই বিষয় সম্পর্কিত একটি প্রফেশনাল ফেসবুক বিজনেস পেজ তৈরি করবেন। রিলেটেড প্রোডাক্টও করতে হবে। এছাড়াও সেগুলোকে প্রপারওয়ে তে মার্কেটিং করে প্রোডাক্ট সেল করতে হবে।
তাহলে চলুন আগে ফেসবুকের জন্য সেরা বিজনেস আইডিয়াগুলো নিয়ে আলোচনা করি তারপর সমস্ত বিষয় ক্লিয়ার করি। তাহলে হয়তো আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
১০টি সেরা ফেসবুক বিজনেস আইডিয়া ২০২৩
ফেসবুক বিজনেস আইডিয়া নিয়ে আমি অনেক রিসার্চ করার পর যে সেরা ১০ টি বিজনেস আইডিয়া পেয়েছি। সেগুলো আমি ধারাবাহিকভাবে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব। এর পাশাপাশি বিজনেস গুলোকে কিভাবে এক্সপ্লেন্ড করবেন এবং মার্কেটিং করবেন সে রিলেটেড টিপস ও প্রত্যেকটি বিজনেসের সাথেই দেয়া থাকবে।
এখানে যে সিরিয়াল রয়েছে সেটা সবার জন্য সমান নয়। কিন্তু সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমি এই বিষয়গুলো এখন ক্লিয়ার করব। তাহলে চলুন শুরু করি:
১. পোশাক বা ড্রেস
প্রত্যাশিতভাবেই আমরা সবাই জানি যে সবথেকে জনপ্রিয় ই-কমার্স এবং অনলাইনে সেল করার মতো প্রোডাক্ট এর নামই হলো পোশাক বা ড্রেস। ছেলে, মেয়ে কিংবা শিশু সবার পোশাকের প্রয়োজন হয়। ২০২১ সালের একটি দারাজের প্রতিবেদন অনুসারে তাদের মোট বিক্রি করা প্রোডাক্ট এর মধ্যে প্রায় পোশাকের অবদান ছিল ৫৭%।
এছাড়াও আরো অনলাইন ভিত্তিক অনেক মার্কেটপ্লেস এই ধরনের পোশাক বিক্রয় করা হয়ে থাকে। কিন্তু এখানে অনেক জনের প্রশ্ন থাকতে পারে যে, পোশাক নিয়ে বিজনেস করা কি ঠিক হবে ফেসবুকের মধ্যে? জি ১০০% উচিত হবে, কারণ পোশাক এমন একটি জিনিস যা সবার প্রয়োজন হয় এবং মানুষ অনলাইন এই এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে পোশাক ক্রয় করে।
বিশেষ করে মেয়ে এবং বাচ্চাদের জন্য নতুন নতুন জামা কাপড়গুলো অনলাইনে সব থেকে বেশি বিক্রয় হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পুরুষ মানুষ পোশাক ক্রয় করলেও এর মাত্রা মেয়ে এবং বাচ্চাদের তুলনার কম।
এজন্য আপনি চাইলে মেয়েদের বা বাচ্চাদের পোশাককে কেন্দ্র করে আপনার ফেসবুক বিজনেস শুরু করে দিতে পারেন। ফেসবুকের মাধ্যমে পোশাক সেল করা খুবই সহজ।
আর আপনি যদি পোশাক তৈরি করা জানেন কিংবা হাত তৈরি পোশাক সম্পর্কে আপনার ভালো পরিমাণে জ্ঞান থাকে। তাহলে এই বিজনেস আরো বেশি পরিমাণে লাভজনক হতে পারবেন। আপনি চাইলে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পোশাক ব্যবহার করে একটি চমৎকার বিজনেস শুরু করে দিতে পারেন।
আপনি নিজে নিজে যদি পোশাক তৈরি করে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনি নিজে তৈরি পোশাকগুলোর ছবি তুলে সরাসরি ফেসবুকে দিয়ে সেগুলো সেল করতে পারেন। পোশাক বিক্রির ক্ষেত্রে অবশ্য মনে রাখবেন ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা প্রায় ৩x পর্যন্ত বেশি পোষাক ক্রয় করে থাকে।
প্রথমত আপনি চাইলে একটি নির্দিষ্ট জায়গা কে কেন্দ্র করে পোশাক বিক্রয় করা শুরু করে দিতে পারেন এবং পরবর্তীতে তা বিস্তার ঘটাতে পারেন। আপনি চাইলে অনলাইন থেকে সরাসরি প্রোডাক্ট ক্রয় করে সেটাকে রিসেলিং করতে পারেন।
এছাড়াও আপনি সরাসরি কোম্পানি থেকে প্রোডাক্ট পোশাক ক্রয় করতে পারেন কিংবা বিদেশ থেকে পোশাক আমদানি করতে পারেন। এছাড়া বর্তমান টি-শার্ট ডিজাইন করার মাধ্যমে খুব ভালো পরিমাণ পোশাক সেল করা সম্ভব।
ফেসবুকে পোশাক বা ড্রেস বিক্রি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- সুন্দর ভাবে ছবি তুলে এডিট করে পাবলিশ করতে হবে।
- হাতের তৈরি পোশাককে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে।
- মেয়ে এবং বাচ্চাদেরকে টার্গেট করে মার্কেটিং করা উচিত।
- ফেসবুকের এডভারটাইজিং এর সাহায্য নিতে হবে এবং ভিডিও বেশি করে ছাড়তে হবে প্রোডাক্ট রিলেটেড।
- পোশাক তৈরির কোম্পানিগুলোর সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে।
- ইন্টারন্যাশনাল মাধ্যম থেকে আকর্ষণীয় পোশাক আমদানি করতে পারেন।
- একটি নির্দিষ্ট ছোট অঞ্চলকে কেন্দ্র করে প্রথমদিকে বিজনেস শুরু করতে পারেন।
- পোশাকের কোয়ালিটি দিকে সবসময় মনোযোগ দিতে হবে।
- পোশাক বিক্রির সময় পোশাকের সুবিধা গুলো সব সময় ভালোভাবে উপস্থাপন করবেন।
- বিশেষ দিন গুলোকে কেন্দ্র করে বিশেষ পোশাক সেল করতে পারেন।
- বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে প্রোডাক্ট প্রমোশন করা।
- প্রয়োজনের টি-শার্ট প্রিন্টিং মেশিন ক্রয় করে নিজে নিজে পোশাক ডিজাইন করে সেল করা
২. জুতা বা সুজ
অনেকজন হয়তো ভেবে অবাক হচ্ছেন যে জুতা বিক্রি করেও কি ফেসবুক থেকে বিজনেস করা সম্ভব? জি অবশ্যই সম্ভব, ফেসবুকের মধ্যে যে প্রোডাক্ট বিক্রি করা হয় তার মধ্যে জুতা অন্যতম।
বর্তমানে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের জুতা বিক্রি করা হয়ে থাকে। যার মধ্যে রয়েছে বুট জুতা, স্যান্ডেল, হিল জুতা, বাচ্চাদের জন্য জুতা, লোফার, বিজনেস সু, আমদানি করা জুতা ইত্যাদি। ছেলে, মেয়ে কিংবা বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাই নিজের পছন্দের জুতা পড়তে চায়।
এখন বর্তমানে যেহেতু নতুন নতুন জুতা আসতেছে সেহেতু মানুষের আগ্রহ ও জুতার থেকে বেশি পরিমাণে বাড়তেছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আপনি চাইলে ফেসবুকের মাধ্যমে জুতা বিক্রির পেজ তৈরি করে সেখান থেকে জুতা বিক্রি করতে পারেন।
ফেসবুক পেজের মাধ্যমে জুতা বিক্রি করা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠতেছে। সুতরাং এখনই আপনাকে পদক্ষেপ নিতে হবে যদি আপনি এই সেক্টরে কাজ করতে চান। ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা প্রায় ৬০% বেশি পরিমাণে জুতা ক্রয় করে থাকে। সেজন্য মেয়েদের জুতা কে কেন্দ্র করেও ব্যবসা কে গঠন করতে পারেন।
কিন্তু মেয়েদের জুতার থেকে ছেলেদের জুতার মধ্যে বেশি পরিমাণে লাভ করা সম্ভব হয়। আর বর্তমানে ঢাকা সহ বিভিন্ন শহর অঞ্চলগুলোতে অনলাইনে জুতা বিক্রির নতুন নতুন সম্ভাবনা জাগ্রত হচ্ছে। সারা বছর বাংলাদেশে এক এক ধরনের জুতা এক এক সময় বিক্রি করা হয়।
যেমন শীতকালে বেশি পরিমাণে বুট জুতা বিক্রি করা হয় এবং মেয়েদের জন্য রিলেটেড জুতা এবং গ্রীষ্মকালে বিভিন্ন ধরনের স্যান্ডেল বিক্রি করা হয়ে থাকে। এছাড়া সারা বছর বিভিন্ন ধরনের জুতা বিক্রিয়া করা হয়ে থাকে।
বিশেষ করে যারা স্টুডেন্ট তাদের কেন্দ্র করে যদি আপনি আপনার জুতার ব্যবসা তৈরি করতে পারেন, সেক্ষেত্রেও আপনার ব্যবসা সফল হতে পারে। যেহেতু একটি জুতার দোকানে ব্রান্ডের জুতাগুলো থাকে না সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলে ব্র্যান্ডের জুতোগুলো আপনার অনলাইনে রাখতে পারেন। তাহলে সেখান থেকেও আপনি খুব ভালো পরিমাণে সেল করতে পারবেন।
ফেসবুকে জুতা বিক্রি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- জুতার ছবি ও বৈশিষ্ট্য সঠিকভাবে এবং আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
- জুতার ব্রান্ড, সাইজ এবং অন্যান্য বিষয়গুলোকে ক্লিয়ার করতে হবে।
- জুতাগুলোর উপকারিতা সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে।
- বিশেষ সময়টি কেন্দ্র করে পেইড অ্যাডভার্টাইজিং করতে পারেন এবং কাউকে দিয়ে স্পন্সারশিপ করে প্রোডাক্ট বিক্রয় বাড়াতে পারেন।
- জুতাগুলোকে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে প্রমোট করতে পারেন কিংবা নিজেরই একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করতে পারেন।
- বাচ্চাদের স্কুলের জুতা, ছেলেদের প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক জুতা এবং মেয়েদের হিল জুতাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করবেন।
- নিয়মিত প্রোডাক্ট আপলোড করবেন এবং সেগুলোকে শেয়ার করবেন সবার মাঝে।
- জুতার বৈশিষ্ট্য নিয়ে ভিডিও তৈরি করে পাবলিশ করতে পারেন ও রিলস এর সুবিধা নিতে পারেন।
- কাস্টমারদের কে সবসময় প্রাধান্য দিয়ে কাজ করবেন এবং জুতার কোয়ালিটি দিকে লক্ষ্য রাখবেন।
৩. ঘড়ি বা ওয়াচ
ঘড়ি অনেক জনপ্রিয় একটি ই-কমার্স প্রোডাক্ট যা ফেসবুক থেকে শুরু করে সমস্ত মার্কেটপ্লেসের অধিক হারে বিক্রয় করা হয়ে থাকে। আমরা যখন কাউকে কোন গিফট প্রদান করতে চাই তখন আমাদের প্রথমেই যে গিফটের কথা মনে আসে সেটা হল ঘড়ি।
বর্তমানে বাংলাদেশে ঘড়ির চাহিদা অনেক বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে আধুনিক ছেলে এবং মেয়েদের কাছে। বর্তমানে রোলেক্স থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ঘড়িগুলো খুব সহজে বিক্রয় করা যাচ্ছে ফেসবুক এর মধ্যে।
ঘড়ি মূলত আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি ব্যবহারযোগ্য প্রডাক্ট, যা আমরা সব জায়গায় ব্যবহার করতে পারি। বর্তমানে লাক্সারি ঘড়ি, ভিনটেজ ঘড়ি কিংবা স্পোর্টস ঘড়ি এই সমস্ত ঘড়িগুলো বাজারে খুব বেশি পরিমাণে বিক্রয় করা হচ্ছে।
আচ্ছা আপনার হাতে এখন হয়তো কোন একটি ঘড়ি রয়েছে। যদি আপনার ঘড়িটি নষ্ট হয়ে যায় কিংবা আপনি চাইবেন একটি ভালো ঘড়ি নিতে। তাহলে আপনি অবশ্যই অনলাইনে প্রথমে সার্চ করবেন। ঠিক একই ভাবে সবাই ঘড়ি পছন্দ করে এবং সবাই ঘড়ি ব্যবহার করে।
আপনি এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে ঘড়ি বিক্রয় রিলেটেড ফেসবুক business তৈরি করতে পারেন। সেখান থেকে আপনার ঘড়ি রিলেটেড প্রোডাক্টগুলো সেল করতে পারেন।
বর্তমানে ঘড়ির রিলেটেড ফেসবুক পেজ বিজনেস গুলো খুব ভালো পরিমাণে সফলতা পাচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যবসা করার পূর্বে প্রথমেই মাথায় রাখবেন এই বিজনেস করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে হাতে কিছু টাকা নিয়ে নামতে হবে কারণ বর্তমানে ব্র্যান্ডের ঘড়িগুলো এবং যেই ঘড়িগুলো মানুষ পছন্দ করে সেগুলোর দাম একটু বেশি হয়।
আর প্রফেশনাল ভাবে বিজনেস করার চেষ্টা করবেন। তাহলে ভবিষ্যতে আপনি একটি বড় বিজনেসম্যান রূপান্তর হতে পারবেন। ঘড়ি বিজনেসের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনায় অনেক বেশি এবং এটি অনেক লাভজনক হতে পারে যদি সঠিকভাবে করা যায়।
ফেসবুকে ঘড়ি বা ওয়াচ বিক্রি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- ঘড়ির কোয়ালিটির দিকে সবসময় মনযোগ রাখতে হবে।
- প্রফেশনালি ঘড়ির ছবি তুলে পাবলিশ করতে হবে।
- ফেসবুকে অ্যাডভারটাইজিং করতে হবে ও স্পন্সারশিপের মত প্রোমোশন গুলো করা যেতে পারে।
- বিভিন্ন প্রকার ব্র্যান্ডের ঘড়ি রাখার চেষ্টা করবেন এবং এর সাথে সাথে অল্প মূল্যের ঘড়িগুলো কাছে রাখবেন।
- সকল ধরনের কাস্টমারদের সাথে সম্মানের সাথে কথা বলবেন। কেউ যদি ১০ হাজার টাকার ঘড়ি কিনে তার সাথে যেরকম ব্যবহার করবেন, ঠিক ১০০ টাকা দিয়ে ঘড়ি কেনা কাস্টমারদের সাথেও একই ব্যবহার করবেন।
- নতুন নতুন স্টাইলিশ ঘড়িগুলো নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেন।
- চাইলে প্রথম দিকে অঞ্চল ভিত্তিক ভাবে বিজনেস শুরু করতে পারেন।
- বিদেশ থেকে চাইলে ইমপোর্ট করে বিক্রি করতে পারেন।
- ঘড়ির পাশাপাশি ঘড়ি রিলেটেড কিছু প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন।
- Facebook গ্রুপ এবং যারা এই বিষয়ে আগ্রহী তাদের কাছে প্রোডাক্টের প্রমোশন করতে পারেন।
- ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করে সেখানে ঘড়ির সুবিধা এবং বৈশিষ্ট্য গুলো জানাতে পারেন ও সবার সামনে শেয়ার করতে পারেন।
৪. সার্ভিস সেল করা
আপনি যদি অনলাইন ভিত্তিক কোন সার্ভিসের প্রতি দক্ষ হয়ে থাকেন কিংবা অনলাইন ভিত্তিক কোন দক্ষতা সেল করতে চান, সেক্ষেত্রে ফেসবুক পেজ আপনার জন্য সেরা হবে। ধরে নেন আপনি একজন রাইটার কিংবা এডিটর অথবা কোন একটি বিষয় সম্পর্কে ভালো জানেন তাহলে আপনি চাইলে সেই রিলেটেড আপনার দক্ষতা গুলো ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সেল করতে পারবেন।
আপনি যে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন সেই সম্পর্কে সবার কাছে আপনার দক্ষতা প্রকাশ করার মাধ্যমে আপনার একটি ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার এখান থেকে গড়ে তুলতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে নিজস্ব কোর্স তৈরি করতে পারেন। কিংবা নিজস্ব কোন রিলেটেড প্রোডাক্ট তৈরি করেও সেল করতে পারেন।
সার্ভিস সেল করে facebook থেকে একটি ভালো করা সম্ভব কিন্তু এক্ষেত্রে সব সময় সঠিকভাবে কাজ করতে হবে। বর্তমানে কেউ এসইও রিলেটেড টুলস প্রোভাইড করে, কেউ গ্রাফিক্স ডিজাইন রিলেটেড টুল প্রোভাইড করে, কেউ ক্রেডিট কার্ড সেল করে, কেউ আবার পেপাল এবং অন্যান্য পেমেন্ট সিস্টেমগুলোও সেল করে, কেউ কেউ আবার প্রিমিয়াম কোর্স এবং প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন গুলো সেল দিয়ে থাকে।
আপনার যদি এই বিষয়ে জানা থাকে কিংবা কোন প্রোডাক্ট থাকে তাহলে আপনিও খুব ভালো পরিমাণে সেল করতে পারবেন। এছাড়াও ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যক্তিগত কোর্স কিংবা পড়ালেখা বিষয়ক সার্ভিসও সেল দিতে পারেন।
মূলত আপনি যদি কোন প্রকার টুল কিংবা দক্ষতাকে সেল করে আয় করতে চান। তাহলে আপনি প্রফেশনাল ভাবে ফেসবুক মার্কেটিং করার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।
ফেসবুকে সার্ভিস বা প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- সার্ভিস সম্পর্কে প্রথমে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
- কোন প্রকার টুল প্রোভাইড করার সময় অবশ্যই আসল ও যেই টুল দেখানো হয়েছে সেটি প্রদান করবেন
- কাস্টমারদের সাথে সবসময় সম্পর্ক ভালো রাখবেন।
- অবশ্যই facebook অ্যাড এর সহযোগিতা নিতে হবে।
- নিয়মিত ভিডিও এবং আর্টিকেল পাবলিশ করা।
- বিভিন্ন ধরনের লাইভ সেমিনার করার চেষ্টা করা।
- গ্রহণযোগ্য মূল্যের মধ্যে প্রোডাক্ট সেল করা।
- বিভিন্ন গ্রুপ এরমধ্যে নিজের প্রোডাক্ট প্রমোশন করা এবং অন্যের সাহায্য করা।
- প্রোডাক্ট এর মধ্যে কোন সমস্যা থাকলে রিপ্লেস গ্যারান্টি দিয়া।
- নিয়মিত কাস্টমারদের কাছ থেকে রিভিউ গ্রহণ করা।
- প্রোডাক্ট রিভিউ রিলেটেড ভিডিওর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান সম্পর্কিত প্রদান করা।
- যারা মার্কেটে গ্রহণযোগ্য তাদেরকে স্পনসারশিপের আওতায় আনা।
৫. হাতের তৈরি জুয়েলারি এবং প্রসাধনী
বর্তমান সময়ে ফেসবুক এবং অন্যান্য অনলাইন মিডিয়াগুলোতে হাতের তৈরি জুয়েলারি এবং প্রসাধানের অনেক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই চাহিদা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক গুনে।
মেয়েরা জুয়েলারি এবং প্রসাধনী প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকে। আপনি চাইলে তাদেরকে কেন্দ্র করে নিত্যনতুন হাতের তৈরি জুয়েলারি এবং প্রসাধানি পণ্য ফেসবুক পেজের মাধ্যমে খুব সহজে সেল করতে পারবেন। অবশ্যই তৈরিকৃত জুয়েলারি কিংবা প্রসাধনী এগুলো আকর্ষণীয় এবং গ্রহণযোগ্য মূল্যের মধ্যে হতে হবে।
নিত্য নতুন প্রসাধনী যেগুলো দৈনন্দিন জীবনে মেয়েরা ব্যবহার করে থাকে সেগুলো প্রোডাকশন করাও খুব ভালো হবে। মেকআপ থেকে শুরু করে ইসলামিক হিজাব, জামদানি শাড়ী, হাতে বোনা শাড়ি, অন্যন্য শাড়ী, নাকের ফুল , গলার হার, নেকলেস, কানের দুল এবং অন্যান্য সকল প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন।
যেহেতু মেয়েরা বেশিরভাগ সময় ফেসবুকের মধ্যে ব্যয় করে এবং কেনাকাটা করতে পছন্দ করে এজন্য মেয়েদেরকে কেন্দ্র করে ব্যবসা করলে অবশ্যই লাভবান হওয়া সম্ভব এবং ভবিষ্যতে আরও বড় ব্যবসা করা সম্ভব।
বর্তমানে অনেক ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে যেখানে এই ধরনের প্রোডাক্ট গুলো খুবই বেশি পরিমাণে বিক্রি করা হচ্ছে। মেয়ে মানুষেরা যারা ঘরে বসে প্রোডাক্ট সেল করতে চান তারা এই ধরনের প্রোডাক্টগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন।
অধিক কাস্টমার পাওয়ার জন্য ফেসবুক গ্রুপ এবং ফেসবুক এডভারটাইজিং সহযোগিতা নিতে পারেন। এছাড়াও আপনার বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে অন্যদেরকেও মোটিভেট করবেন যেন তাদের আশেপাশের যারা বন্ধুবান্ধব রয়েছে তারা যেন আপনার কাছ থেকে প্রোডাক্ট ক্রয় করে।
প্রথম দিকে আপনি নির্দিষ্ট একটি অঞ্চল কে কেন্দ্র করে অর্থাৎ আপনার আশেপাশের অঞ্চল কে কেন্দ্র করে আপনার জুয়েলারি এবং প্রসাধনী ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। তা পরবর্তীতে তা সম্পূর্ণ বাংলাদেশে বিস্তার ঘটাতে পারেন।
ফেসবুকে জুয়েলারি এবং প্রসাধনী বিক্রি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- আকর্ষণীয় জুয়েলারি এবং প্রসাধনে তৈরি করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
- অনলাইনে পাবলিশ করার সময় সুন্দরভাবে এডিট করতে হবে। যেন খুব সুন্দর ভাবে দেখা যায়।
- প্রসাধনের যে বিষয়গুলো নিয়ে আপনি প্রোডাকশন করতে চাচ্ছেন সেগুলোকে অবশ্যই হাই কোয়ালিটি সম্পন্ন হতে হবে।
- ফেসবুক মার্কেটিং ও অ্যাডভার্টাইজিং এর দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
- বর্তমানে অনেক গ্রুপ রয়েছে যেগুলোতে এই ধরনের প্রোডাক্ট সেল করা যায় সেখানে মেয়েদেরকে কেন্দ্র করে প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন।
- আপনি চাইলে বড় বড় দোকানগুলোতে সরাসরি প্রোডাক্ট সেল দিতে পারবেন।
- জুয়েলারি গুলো অবশ্যই যেন আসল হয় সেদিনকে লক্ষ্য রাখবেন।
- কাস্টমারদের সাথে নিয়মিত সম্পর্ক রাখবেন এবং তাদের কাছ থেকে রিভিউ নিবেন।
- ফেসবুকে ভিডিও এবং রিল মাধ্যমে জুয়েলারি এবং প্রসাধনী গুলো প্রমোশন করবেন।
৬. পোষা প্রাণীর রিলেটেড প্রোডাক্ট বিক্রি
জেনে অবাক হবেন হয়তো গত কয়েক বছরের মধ্যে পোষা প্রাণীর সংখ্যা বাংলাদেশে প্রায় ৫x অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ এখন তাদের পোষা প্রাণী পালন করা শুরু করেছে বিশেষ করে কুকুর, বিড়াল, পাখি ইত্যাদি প্রাণী। এই ধরনের শখ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি এই রিলেটেড বিজনেস গুলো ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আপনি চাইলে ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে পোষা প্রাণীদের জন্য নানান ধরনের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন। আপনি ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে পোষা প্রাণীদের জন্য নিচের দেয়া প্রোডাক্ট গুলো খুব সহজে বিক্রি করতে পারবেন।
- পেট এক্সেসরিজ: আপনি পোষা প্রাণীদের জন্য নানা ধরনের এক্সেসরিজ জিনিস বিক্রি করতে পারেন। যেমন collars, leashes, pet clothing, এবং grooming এর মত প্রোডাক্টগুলো।
- পেট ফুড এন্ড ট্রিটস: আপনি চাইলে পোষা প্রাণীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের খাদ্য উৎস, খাদ্য তালিকা এবং কোন ধরনের খাদ্যগুলো প্রাণীরা বেশি খায় সে সম্পর্কিত প্রোডাক্ট গুলো সেল করতে পারবেন ফেসবুক পেজ ব্যবহার করেই।
- পোষা প্রাণীদের জন্য খেলনা: আপনি ফেসবুকে ব্যবহার করেই বিড়াল, কুকুর, পাখি এবং অন্যান্য পোষা প্রাণীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের এন্টারটেইনমেন্ট মূলক খেলনা বিক্রি করতে পারেন।
- প্রাণীদের জন্য বিছানা এবং ফার্নিচার: যাদের প্রাণী পালন করার শখ রয়েছে তারা তাদের পোষা প্রাণীদের জন্য স্টাইলিশ বেড থেকে শুরু করে নানা ধরনের ফার্নিচার ক্রয় করে থাকে তাদের রুমের জন্য। সুতরাং ফেসবুক বিজনেস পেজ ব্যবহার করে আপনি চাইলে পোষা প্রাণীদের জন্য এইরকম বেড এবং ফার্নিচার গুলো বিক্রয় করতে পারবেন।
- পেট Health and Wellness প্রডাক্টস: আপনি পোষা প্রাণী দের জন্য হেলথ কেয়ার রিলেটেড অনেকগুলো প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন। যার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, সাপ্লিমেন্ট এবং হাইজিন রিলেটেড প্রোডাক্টগুলো।
- পোষা প্রাণীদের ট্রেনিং এবং আচরণ রিলেটেড প্রোডাক্ট: অনেক পোষা প্রাণীর মালিক রয়েছে যারা তাদের প্রাণীর আচরণ পাল্টানোর জন্য এবং তাদেরকে আরো কর্মক্ষম করানোর জন্য ট্রেনিং করিয়ে থাকে। আপনি তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং রিলেটেড প্রডাক্ট, টুলস এবং গাইডলাইন রিলেটেড প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন।
এগুলো ছাড়াও আপনি Custom Pet Portraits, Pet Travel Gear, Pet Apparel রিলেটেড প্রডাক্ট গুলো খুব সহজে সেল করতে পারবেন।
পোষা প্রাণী রিলেটেড প্রোডাক্ট বিক্রি করার সময় অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার প্রোডাক্টগুলো যেন পোষা প্রাণী মালিকদের কাছে এনগেজিং এবং ভালো লাগে।
আপনি ফেসবুকের মধ্যে পেট কেয়ার সম্পর্কে কিছু টিপস এবং কিভাবে পেটদেরকে আরো সুন্দর দেখানো যায় এই রিলেটেড সহযোগিতা করতে পারেন। সেই সাথে আপনার প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন। অবশ্যই আপনি ফেসবুক এডভারটাইজিং এর সাহায্য নিতে পারেন এবং বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে আপনার প্রোডাক্ট গুলো শেয়ার করতে পারেন।
বর্তমানে ফেসবুক এর মধ্যে হাজার হাজার এই রিলেটেড গ্রুপ সেখানে আপনার প্রোডাক্টগুলোর সাথে সাথে টিপস শেয়ার করে আপনার একটি পজিটিভ ব্রান্ডিং ও তৈরি করতে পারবেন।
৭. ফিজিক্যাল হেলথ এবং মানসিক স্বাস্থ্য রিলেটেড প্রোডাক্ট
শারীরিক স্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের জীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য একে অপরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। বর্তমানে প্রায় সব মানুষ এই শারীরিক কিংবা মানসিক রোগের মধ্যে রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আপনি এই বিষয়টাকে কেন্দ্র করে একটি ভালো বিজনেস শুরু করে দিতে পারেন ফেসবুক ব্যবহার করে। তার পূর্বে একটি কথা বলে নিতে চাই, যাদের শারীরিক স্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ভালো পরিমাণে জ্ঞান নিয়েই তারা এই বিষয়টা নিয়ে কাজ করবেন না।
কারণ এটি অনেক সেনসিটিভ একটি টপিক যা ভুল ভাবে উপস্থাপন করলে অনেক মানুষের ক্ষতি হতে পারে। আপনি ফেসবুক ব্যবহার করে নিচের শারীরিক এবং মানসিক প্রোডাক্ট গুলো খুব সহজে বিক্রি করতে পারবেন।
- Nutrition সাপ্লিমেন্ট: আপনি ফেসবুক পেজ ব্যবহার করেই বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, ক্যালসিয়াম এবং স্বাস্থ্যজনিত বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয় রিলেটেড অনেকগুলো প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন।
- ফিটনেস যন্ত্রপাতি এবং প্রসাধনী: আপনি এক্সারসাইজ সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের ইকুইপমেন্ট এবং ফিটনেস এক্সেসরিজ সেল করতে পারেন। এছাড়াও স্বাস্থ্য সঠিক রাখতে যে প্রোডাক্ট গুলো লাগে সেই প্রোডাক্টগুলো কেউ সেল করতে পারেন।
- মানসিক স্বাস্থ্য রিলেটেড প্রোডাক্ট সেল করা: মানসিক স্বাস্থ্য রিলেটেড অনেকগুলো প্রোডাক্ট রয়েছে। যেগুলো অনলাইন থেকে আপনি কালেক্ট করে সরাসরি সেল করতে পারবেন। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য কিভাবে ঠিক করা যায় এই বিষয়গুলো নিয়েও আপনি বই এবং কোর্স চালু করতে পারেন।
- প্রাকৃতিক এবং অর্গানিক ফুড বিক্রি করা: বর্তমান বাজারে প্রাকৃতিক এবং অর্গানিক ফুডের অনেক বেশি চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে অনেক ব্যক্তিরাই এই ধরনের অর্গানিক খাদ্য বিক্রি শুরু করে দিয়েছে। আপনি চাইলে অর্গানিক যত খাদ্য এবং ফল রয়েছে সেগুলোকে বিক্রি করতে পারেন।
- ইয়োগা এবং মেডিটেশন প্রোডাক্ট সাপ্লাই: আপনি চাইলেই ইয়োগা করার জন্য ও মেডিটেশন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন। এই ধরনের আরো অন্যান্য অনেক প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। বর্তমান সময়ে এই প্রোডাক্টগুলো খুবই ভালো চলতেছে।
এগুলো ছাড়াও আপনি Stress Relief Products, Sleep Aids এর মত প্রোডাক্ট গুলো খুব সহজেই অনলাইনে অর্থাৎ ফেসবুক ব্যবহার করেই সেল করতে পারবেন।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পণ্য এবং সার্ভিস গুলো বিক্রি করার সময় অবশ্যই সঠিক তথ্য প্রদান করবেন। গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানের দিকে বেশি ফোকাস দিবেন এবং নতুন নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন। আর আপনার ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের ফেসবুক গ্রুপে এর সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন।
অবশ্যই ফেসবুক পেজের পাশাপাশি অ্যাডভার্টাইজিং দিকেও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। আর যেহেতু এই প্রবলেম এখন সবার মধ্যেই উপলব্ধ সেহুতু এই ধরনের ক্লাইন্ট পাওয়া খুব একটা কঠিন হবে না।
৮. পার্সোনাল গিফট
আমরা সবাই যখন কোন গিফট পাই তখন অধিক পরিমাণে আনন্দ পেয়ে থাকি। প্রিয়জনকে গিফট দেয়ার জন্য বর্তমানে নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। কিন্তু আপনি চাইলে অনলাইনকে তথা ফেসবুক কে ব্যবহার করে একটি বিজনেস শুরু করে দিতে পারেন এই বিষয়ের উপর।
ফেসবুক বিজনেস পেজের মাধ্যমে আপনি অসাধারণ কিছু পার্সোনাল গিফট তৈরি করে আপনার ক্লায়েন্টকে সরাসরি সেল দিতে পারেন। এর জন্য আপনি প্রি অর্ডার নিতে পারেন অর্থাৎ প্রথমে অর্ডার নিয়ে তারপর জায়গামতো ডেলিভারি দিয়ে দিবেন।
যেহেতু বাংলাদেশের সারা বছর অনুষ্ঠান লেগেই থাকে সেহেতু এই বাংলাদেশে এই ধরনের ব্যবসা করা খুবই লাভজনক। ভবিষ্যতে এই বিজনেস টি খুলেই জনপ্রিয় এবং লাভজনক হবে বলে অনেক বিশেষজ্ঞরা মনে করে।
আপনাকে তার পূর্বে বিভিন্ন ধরনের গিফট তৈরি করা থেকে শুরু করে কিভাবে সেটাকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা যায় এই বিষয়ে ভালোভাবে জানতে হবে। গিফট হিসাবে বিভিন্ন ধরনের জুয়েলারি, ঘড়ি, বাসার জন্য আসবাবপত্র, পোষা প্রাণী, পুরনো সময়ের কোনো স্মৃতি এই ধরনের গিফট গুলো বেশি পপুলার।
এছাড়াও আপনি ক্লায়েন্টের কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন যে তিনি কি ধরনের গিফট তার প্রিয়জনকে দিতে চাচ্ছে। অবশ্যই এজন্য ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারেন এর পাশাপাশি ফেসবুকের মধ্যে অ্যাডভার্টাইজিং করতে পারেন। বিভিন্ন গ্রুপ ও ব্যক্তির সাথে এ বিষয়ে সহযোগিতা নিতে পারেন।
আর অবশ্যই ক্লাইন্টের সাথে সবসময় সুন্দর ও ভালো ব্যবহার করবেন। তারা যেন তাদের পছন্দমত প্রোডাক্ট পায় সেদিকে সব সময় বেশি নজরে দিবেন। প্রোডাক্টের কোয়ালিটি কে কখনোই কম্প্রোমাইজ করবেন না। দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে গেলে ইনশাল্লাহ একসময় আপনি এই সেক্টরে অনেক ভালো একটি পজিশনে চলে যেতে পারবেন।
৯. গার্ডেনিং রিলেটেড প্রোডাক্ট
আমাদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি লোক গার্ডেন করতে পছন্দ করে বলে আমি মনে করি। গাছ আমাদের প্রকৃত বন্ধু আমাদেরকে নানা ভাবে সাহায্য করে। আমাদের মধ্যে অনেক জনের গার্ডেনিং করার অনেক ইচ্ছা রয়েছে। তারা গার্ডেনিং করতে চায় ও গার্ডেনিং শিখতে চায়।
এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আপনি ফেসবুকের মাধ্যমে গার্ডেনিং রিলেটেড বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস প্রদান করতে পারেন। মূলত গাইডেনিং সেক্টর টা অনেক বড়, সুতরাং এই সেক্টরে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করারও সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনি বেসিক গার্ডেনিং থেকে শুরু করে সমস্ত প্রকার গার্ডেনিং এর জন্য প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারবেন। গাছ থেকে মাটি কিংবা ওষুধ অর্থাৎ যাবতীয় প্রোডাক্ট আপনি এখানে সেল করতে পারবেন। কিন্তু আপনার মূল কাজ হচ্ছে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স দেখে খুজে বের করা।
টার্গেট অডিয়েন্স কে খুজে বের করা সব থেকে ভালো মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজিং। ফেসবুক এডভারটাইজিং এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদেরকে খুঁজে বের করতে পারবেন। এছাড়া ফেসবুকের মধ্যে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের গার্ডেনিং রিলেটেড টিপস এবং ভিডিও শেয়ার করতে পারেন যার ফলে আপনার অডিয়েন্সরা আকৃষ্ট হবে।
এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফেসবুক গ্রুপ এবং পেইজ রয়েছে যাদের সাথেও আপনি সরাসরি কন্ট্যাক্ট করে তাদের কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারেন। যদি এই বিষয়ের ভবিষ্যৎ জানতে চান তাহলে এক কথায় বলবো যে ভবিষ্যতে যে সেক্টর গুলো সব থেকে বেশি লাভজনক এবং উদীয়মান তার মধ্যে গার্ডেনিং নিস সবার উপরে থাকবে।
বিশেষ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং নানা ধরনের প্রাকৃতিক সমস্যা সমাধানের জন্য গাছ লাগানোর কোন বিকল্প নেই। সুতরাং নিজে গাছ লাগান এবং অন্যদেরকে গাছ লাগাতে সহযোগিতা করুন।
১০. বেবি প্রোডাক্ট
একজন সাধারণ মানুষ যে প্রোডাক্ট গুলো ব্যবহার করে সেগুলো বাচ্চাদের কখনো ব্যবহার করা উচিত নয় এবং করা হয় না। একজন স্বাভাবিক মানুষের থেকে প্রায় বাচ্চাদের বেশি প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হয়। বাচ্চাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তাদের বাবা মা কখনোই কম্প্রোমাইজ করে না।
আপনি ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে খুব সহজেই বাচ্চা দের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। প্রথমদিকে একটি নির্দিষ্ট জায়গা কে কেন্দ্র করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন পরবর্তীতে তা বৃদ্ধি করে অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে দিতে পারেন। আপনি চাইলে ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে নিচের সংশ্লিষ্ট প্রোডাক্ট গুলো সেল করতে পারেন।
- বাচ্চাদের পোশাক: নতুন জন্ম নেয়া শিশুদের জন্য নানা ধরনের আকর্ষণীয় পোশাক এবং প্রয়োজনীয় পোশাকগুলো বিক্রয় করতে পারেন ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে।
- ডাইপার এবং বেবি কেয়ার প্রোডাক্ট: আপনি বিভিন্ন ধরনের ডাইপার, wipes, বেবি লোশন, শ্যাম্পু এবং অন্যান্য বেবি কেয়ার আইটেমগুলো খুব সহজে সেল করতে পারবেন।
- বাচ্চাদের গিয়ার: বাচ্চাদের জন্য আপনি strollers, car seats, high chairs, baby carriers সহ বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। বর্তমানে এই প্রোডাক্টগুলো অনলাইনে খুব বেশি পরিমাণে বিক্রয় করা হচ্ছে।
- বাচ্চাদের পড়ালেখার ফার্নিচার: আপনি বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় টেবিল চেয়ার এবং পড়া লেখা বিষয়ক বিভিন্ন প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন যেগুলো বাজারে খুব হাই ডিমান্ড রয়েছে।
- বাচ্চাদের খেলনা: বর্তমানে বাচ্চারা সব সময় খেলতে পছন্দ করে এজন্য তাদের পছন্দমত খেলনা ক্রয় করে দিতে তাদের বাবা মা কখনো দ্বিধাবোধ করে না। আপনি বিভিন্ন ধরনের শিক্ষনীয় প্রডাক্ট এবং মজাদার প্রোডাক্টগুলো সেল করতে পারেন। এছাড়া ছোট বাচ্চাদের পড়ালেখা বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের খেলনা ও বিক্রি করতে পারেন।
- বাচ্চাদের খাওয়ার প্রোডাক্ট: আপনি বাচ্চাদের জন্য baby bottles, breast pumps, formula, এবং baby food এর মতো প্রোডাক্ট গুলো খুব সহজেই ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারবেন।
এছাড়াও আরো অনেক ধরনের প্রোডাক্ট রয়েছে যেগুলো আপনি চাইলেই খুব ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারবেন। এক্ষেত্র অবশ্যই প্রোডাক্টের কোয়ালিটির দিকে কখনোই কমপ্রোমাইজ করবেন না।
সব সময় হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ প্রোডাক্ট আপনার কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করবেন। প্রোডাক্টের মধ্যে যথাযথ ইনফরমেশন এবং অন্যান্য বিষয়গুলো সংযুক্ত করে দিবেন।
যারা আপনার প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করছে তাদের কাছ থেকে রিভিউ গ্রহণ করবেন এবং সবাইকে তাদের প্রোডাক্টগুলো ব্যবহারের অনুরোধ করবেন। আপনি কখনো কখনো বান্ডিল হিসেবে নানা ধরনের প্রোডাক্ট একসাথে বিক্রয় করবেন।
তাহলে প্রোডাক্ট গুলো আরো বেশি পরিমাণে বিক্রয় হবে। আপনাদের অনলাইন সাপোর্ট সব সময় প্রদান করতে হবে। আপনার অডিয়েন্স খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রয়োজনে ফেসবুকের মধ্যে অ্যাডভারটাইজিং চালাতে হবে। অ্যাডভার্টাইজিং এর পাশাপাশি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ এবং ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্কযুক্ত করে প্রোডাক্ট সেল করতে হবে।
ফেসবুকে প্রোডাক্ট বিক্রির সময় যে বিষয়গুলো মনোযোগ রাখতে হবে
একটি ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ এবং মনিটরিং করতে হয়। ফেসবুকের মাধ্যমে যখন আপনি বিজনেস করতে যাবেন তখন অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন দিক সম্পর্কে মনযোগী হতে হবে।
যদি আপনি বিগিনার হয়ে থাকেন ও পূর্বে কোন এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে অবশ্যই নিচের দেয়া টিপস গুলো ফলো করতে পারেন।
১। কাস্টমার সার্ভিসের দিকে মনোযোগ দেয়া
একটি ব্যবসা কে টিকিয়ে রাখতে অবশ্যই কাস্টমার সার্ভিসের কোন বিকল্প নেই। ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যবসা করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে অনলাইনে কাস্টমার সার্ভিসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এর সাথে সাথে দ্রুততার সাথে আপনার কাস্টমারদের মেসেজের রিপ্লাই দিতে হবে ও তাদের সাথে সুন্দর ভাবে কথোপকথন করতে হবে।
আপনার কাস্টমার সার্ভিস যত ভালো হবে, আপনার সম্মান ততো অন্যদের কাছে বৃদ্ধি পাবে। কাস্টমার সার্ভিসের মাধ্যমে যাবতীয় সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবেন এবং কেউ যদি প্রোডাক্ট কিনতে চায় সেই সম্পর্কে তাদের সম্পূর্ণ ধারণা দিবেন। কাস্টমারদের সাথে সব সময় বন্ধুসুলভ আচরণ করা উচিত।
আরেকটি বিষয় সমস্ত কাস্টমারকে সমান সম্মান প্রদান করবেন। কেউ যদি বেশি প্রোডাক্ট ক্রয় করে আর কেউ যদি কম করে তাহলে তাদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি না করে উভয়ের সাথে সম্পর্ক ভাল রাখুন। কারণ আজকে হয়তোবা একটি প্রোডাক্ট কিংবা কম দামি প্রোডাক্ট ক্রয় করল কিন্তু ভবিষ্যতে তারাই আপনার কাছ থেকে অনেক প্রোডাক্ট বা বেশি দামি প্রোডাক্ট করবে।
সুতরাং কাস্টমার সার্ভিসকে সবসময় আকর্ষণীয় করে তুলুন এবং সব সময় অনলাইনে একটি থাকার চেষ্টা করবেন।
২। প্রতিযোগীদের খুঁজে বের করা
আপনি যখন একটি বিজনেস করতে যাবেন তখন অবশ্যই আপনাকে আপনার প্রতিযোগীদের কে খুঁজে বের করতে হবে। একটি সফল বিজনেস করার এটি একটি অন্যতম শর্ত। আপনার কম্পিটিটাররা কি ধরনের প্রোডাক্ট সেল করতেছে, তারা কি ধরনের অফার প্রভাব করতেছে, কি কি মাধ্যমে করে প্রোডাক্ট সেল করতেছে।
সার্বিক বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং তাদের থেকে ভালো মার্কেটিং কৌশল অবলম্বন করতে হবে। তারা যেই পথগুলো ব্যবহার করে মার্কেটিং করতেছে তাদের থেকে ভালো অপশন খুজে বের করতে হবে।
৩। হাই কোয়ালিটি প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা
অনলাইনে ব্যবসা করতে গেলে প্রোডাক্টের কোয়ালিটি এবং বৈশিষ্ট্যের দিকে সবসময় মনোযোগ রাখবেন। আপনার প্রোডাক্টের কোয়ালিটি ও বৈশিষ্ট্য যত বেশি হবে প্রোডাক্ট বিক্রির সম্ভাবনাও তত বৃদ্ধি পাবে। আপনি যখন একটি হাই কোয়ালিটি প্রোডাক্ট সবার কাছে শেয়ার করবেন তখন অটোমেটিক্যালি আপনার কাস্টমারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়াও হাই কোয়ালিটি প্রোডাক্টের পাশাপাশি সব সময় বৈশিষ্ট্যের দিকেও নজর রাখবেন। নতুন নতুন প্রোডাক্টগুলো নিয়ে ব্যবসা করার চেষ্টা করবেন। আরে এমন প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা করবেন যেই প্রোডাক্টগুলো যেন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরাও কিনতে পারে।
৪। ফেসবুক মার্কেটিং অবলম্বন করা
ফেসবুক মার্কেটিং অনেক বিশাল একটি ব্যাপার এক্ষেত্রে আপনি চাইলে ফেসবুকে অ্যাডভার্টাইজিং সিস্টেম ইউটিলাইজ করতে পারেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে আপনার প্রোডাক্ট শেয়ার করতে পারেন। এছাড়া অনেক বড় বড় ব্যক্তি হয়েছে তাদের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করে তাদের দ্বারা আপনার প্রোডাক্টের প্রমোশন করতে পারেন।
এছাড়াও বিভিন্ন পেজগুলোতে গিয়ে তাদের প্রোডাক্টের থেকে ভালো প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করবেন। ফেসবুক এডভারটাইজিং এর মাধ্যমে বিশাল অডিয়েন্স পাওয়া সম্ভব।
এক্ষেত্রে যদি আপনি ফেসবুক মার্কেটিং না জানেন এবং এডভারটাইজিং কিভাবে করতে হয় সে বিষয় না জানেন। তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
৫। ওয়েবসাইট তৈরি করুন
আপনার প্রোডাক্টগুলো ফেসবুকের পাশাপাশি ওয়েবসাইটেও পাবলিশ করার চেষ্টা করবেন। আপনার যদি বেশি টাকা-পয়সা না থাকে তাহলে আপনি ব্লগার ব্যবহার করেও প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনেক বেশি পরিমাণে প্রোডাক্ট সেল করা সম্ভব।
কিন্তু আপনি যদি ওয়েবসাইট তৈরি করার বিষয়ে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের কাছ থেকে প্রফেশনাল ই-কমার্স সাইট তৈরি করে নিতে পারবেন খুব অল্প দামের মধ্যেই। ফেসবুকের পাশাপাশি যদি আপনি ওয়েবসাইট দিয়েও কাজ করেন তাহলে আপনার রেভিনিউ দ্বিগুণ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
৬। ডিসকাউন্ট অফার রাখা
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উৎসব আসে সেই উৎসবগুলোতে আপনি বিশেষ অফার দিতে পারেন কিংবা বান্ডিল অফারে প্রদান করতে পারেন। কিন্তু এমন কোন অফার কিংবা ডিসকাউন্ট প্রদান করবেন না যা আপনার ব্যবসার ক্ষতি করতে পারে।
গ্রহণযোগ্য ডিসকাউন্ট প্রদান করবেন এবং এর পাশাপাশি আপনার প্রোডাক্টগুলোর বৈশিষ্ট্য সবার সামনে উন্মোচন করবেন যেন আপনার প্রোডাক্টের প্রতি সবাই আগ্রহী হয়।
৭। নিয়মিত ভিডিও এবং পোস্ট করা
ফেসবুকের মধ্যে আপনি নিয়মিত আপনার প্রোডাক্ট রিলেটেড ভিডিও তৈরি করবেন এবং পোস্টও পাবলিশ করবেন। এছাড়া বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপেও আপনার সেম কিংবা ইউনিক পোস্ট শেয়ার করতে পারেন। যেন সবাই আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে অবগত হতে পারে।
অবশ্যই এমন ভাবে মার্কেটিং করবেন যেন আপনার ব্রান্ডের উপর কোন প্রকার ক্ষতি না হয়। কমিউনিটি গুলোতে সবাইকে সাহায্য করার চেষ্টা করবেন এর ফলে আপনার অনুসারী সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। যারা ভবিষ্যতে আপনারা কাস্টমারে রূপান্তর হবে।
ফেসবুকের মধ্যে কোন বিষয় নিয়ে বিজনেস করা উচিত
আমি উপরে সেকশনে সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আকারে আপনাদের সামনে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তবুও একটি কথা না বলেই নয় যে এগুলো ছাড়াও আরো অনেক অনেক বিষয় রয়েছে। যেগুলো নিয়ে আপনি ফেসবুকের মধ্যে বিজনেস করতে পারেন।
ফেসবুকের মধ্যে কোন বিষয় নিয়ে বিজনেস করবেন সেটা আপনার ওপর ডিপেন্ড করে। আপনার যে বিষয় সম্পর্কে আগ্রহ বেশি এবং জ্ঞান রয়েছে সেই বিষয় নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবেন। উপরে উল্লেখিত সমস্ত বিষয় নিয়ে কাজ করলেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব এবং ভবিষ্যতে একটি লাভজনক ক্যারিয়ার তৈরি করা সম্ভব।
কিন্তু এক্ষেত্রে আপনাকে অনেক বেশি ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং পরিশ্রম দিয়ে কাজ করতে হবে। এমন বিষয় নিয়ে কাজ করবেন না যে বিষয়ে আপনার অভিজ্ঞতা নেই কিংবা কোন প্রকার জ্ঞান নেই। না হলে সেখানে সেটেল হতেই আপনাকে অনেক বছর লেগে যাবে আর লাভ করা তো অনেক দূরের কথা।
সর্বশেষে বলতে চাই যে আপনি সে বিষয় সম্পর্কে বেশি আগ্রহী এবং বিষয়টা আপনাকে ভালো লাগে সেই বিষয় নিয়েই ফেসবুকে বিজনেস শুরু করার চিন্তা করবেন। হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার কোন ব্যবসা করা উচিত।
উপসংহার
আজকের এই আর্টিকেলে আমি বিস্তারিত আকারে দেখানোর চেষ্টা করেছি ফেসবুকে করা যেতে এমন কয়েকটি বিজনেস সম্পর্কে। এছাড়াও আরো অনেক অনেক বিজনেস আইডিয়া রয়েছে যেগুলো নিয়ে আপনি চাইলে প্রফেশনালি কাজ করতে পারেন। কিন্তু একটি বিষয় সবসময় মাথায় রাখবেন, আপনি যেই বিষয় সম্পর্কে ভালো পারেন এবং জ্ঞান রয়েছে সেই ধরনের প্রোডাক্ট বিক্রি করার চেষ্টা করবেন।
যাইহোক আজকের এই আর্টিকেল অর্থাৎ ফেসবুকের মাধ্যমে করা যেতে পারে এমন ১০টি বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কের আর্টিকেলটা কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন। এছাড়াও আপনার যদি এই বিষয়ে আরো কিছু জানার থাকে কিংবা প্রশ্ন থাকে তাহলেও জানাতে পারেন ইনশাআল্লাহ যথাসম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। তো আজকের এই আর্টিকেল এই পর্যন্তই সবাইকে আসসালামু আলাইকুম।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.