BMI কি ও বিএমআই কিভাবে বের করব |
আপনি কি জানেন যে আপনার ওজন আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
ওজনাধিক্য (অধিক ওজন) এবং স্থূলতা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এগুলোর কারণে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এবং অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করতেছে।
আপনার ওজন ঠিক আছে কিনা তা জানার একটি সহজ উপায় হলো বিএমআই (BMI) চেক করা। বিএমআই হলো Body Mass Index , যা আপনার ওজন এবং উচ্চতার অনুপাতের একটি আনুমানিক পরিমাপ।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিএমআই কী, এটি কীভাবে গণনা করা হয়, এবং এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে আলোচনা করব।
বিএমআই (BMI) কি?
বিএমআই বা বডি মাস ইনডেক্স হলো একজন স্বাভাবিক মানুষের দেহের ওজন ও উচ্চতা অনুসারে আদর্শ ওজন পরিমাপের একটি আদর্শ গাণিতিক প্রক্রিয়া। BMI এর মানের মাধ্যমে খুব সহজেই জানা যায় যে, উচ্চতা অনুযায়ী একজন স্বাভাবিক মানুষের ওজন ঠিক আছে কি না, অর্থাৎ মানুষের দেহের ওজন স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক।
বিএমআই (Body Mass Index) বা শরীরের ভর সূচক হলো একজন মানুষের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বের করার নিয়ম। বিএমআই শরীরের চর্বিযুক্ততার একটি আনুমানিক ধারণা দেয়। এবং আপনার ওজন ঠিক আছে কিনা তা জানার একটি সহজ উপায়।
বিএমআই নির্ণয় পদ্ধতি
বিএমআই নির্ণয়ের পদ্ধতি তুলনামূলক খুবই সহজ। আপনি চাইলে নিচের তিনটি পদ্ধতি অবলম্বন করে খুব সহজেই আপনার বিএমআই নির্ণয় করতে পারবেন।
1. ওজন পরিমাপ:
প্রথমেই আপনাকে আপনার ওজন পরিমাপ করতে হবে। একুরেট ওজন পরিমাপের জন্য আপনি চাইলে যেকোনো ডিজিটাল ওজন স্কেল মেশিন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে অবশ্যই আপনার ওজন কে কেজিতে পরিমাপ করা হবে।
2. উচ্চতা পরিমাপ:
একবার আপনার ওজন পরিমাপ হয়ে গেলে পরবর্তী কাজ হবে আপনার উচ্চতা বা হাইট পরিমাপ করা। আপনার একুরেট উচ্চতা পরিমাপের জন্য একটি স্কেল ব্যবহার করতে পারেন। প্রাথমিকভাবে আপনি চাইলে ফিট কিংবা অন্যান্য উপায়ে পরিমাপ করতে পারেন কিন্তু পরবর্তীতে তা অবশ্যই মিটারে রূপান্তর করতে হবে। কেননা আপনার বি এম আই পরিমাপ করার জন্য উচ্চতা মিটারে পরিমাপ করা হবে।
3. বিএমআই সূত্র:
আপনার উচ্চতা এবং ওজন পরিমাপ করার পর আপনাকে বিএমআই সূত্র অবলম্বন করে আপনার বিএমআই সূচক নির্ণয় করতে হবে। বিএমআই নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত সূত্র ব্যবহার ব্যবহার করতে হবে।
BMI = ওজন (কেজি) / উচ্চতা^2 (মিটার)
উদাহরণ:
ধরে নেন, একজন ব্যক্তির ওজন 70 কেজি এবং উচ্চতা 1.70 মিটার।
তাহলে, তার বিএমআই হবে:
BMI = 70 / (1.7)^2 = 24.22
বিএমআই-এর শ্রেণীবিভাগ:
বিএমআই-এর শ্রেণীবিভাগ |
ওজন এবং উচ্চতার মান অনুযায়ী একজন ব্যক্তির বিএমআই কে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। নিচে অবস্থা অনুযায়ী বিএমআই-এর শ্রেণীবিভাগ তুলে ধরা হলো:
ওজনের অবস্থা | বিএমআই |
---|---|
কম ওজন | 18.5 এর কম |
স্বাভাবিক ওজন | 18.5 থেকে 24.9 |
ওজনাধিক্য | 25 থেকে 29.9 |
স্থূলতা | 30 বা তার বেশি |
১. আন্ডার ওয়াইট বা কম ওজন
কম ওজন হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন স্বাভাবিক ব্যক্তির ওজন তার উচ্চতার চেয়ে কম। এই সমস্যাটি অনাহার, অপুষ্টি বা নির্দিষ্ট শারীরিক অবস্থার কারণে হতে পারে। আন্ডার ওয়াইট বা কম ওজনের কারণে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কম ওজনের কারণে একজন ব্যক্তি দুর্বলতা, ক্লান্তি, ঘুমের সমস্যা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা অনুভব করে থাকে। আন্ডার ওয়াইট বা কম ওজন এর বিএমআই রেঞ্জ 18.5 এর কম হয়ে থাকে।
২. স্বাভাবিক বা নরমাল ওজন
স্বাভাবিক ওজন হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তির ওজন তার উচ্চতার জন্য নর্মাল বা স্বাভাবিক। স্বাভাবিক ওজন একটি স্বাস্থ্যকর বিএমআই এর লক্ষ্য। এটি মূলত তার স্বাভাবিক মানুষের বিএমআই হয়ে থাকে। নরমাল ওজন এর বিএমআই রেঞ্জ 18.5 থেকে 24.9 এর মধ্যে হয়।
৩. ওজনাধিক্য বা অভার ওয়েট
অভার ওয়েট বা ওজনাধিক্য হলো bmi এর এমন একটি অবস্থা যার মাধ্যমে বোঝাই যে একজন ব্যক্তির ওজন তার উচ্চতার জন্য বেশি। ওজনাধিক্য ওজন বৃদ্ধি, অনিয়ন্ত্রিত খাওয়া বা অলসতার কারণে হতে পারে। ওজনাধিক্যের কারণে একজন ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকিতে থাকে।অভার ওয়েট বা ওজনাধিক্য এর বিএমআই রেঞ্জ 25 থেকে 29.9 এর মধ্যে হয়।
৪. স্থূলতা বা অবেস
স্থূলতা বা অবেস হলো BMI এর এমন একটি অবস্থা যার মাধ্যমে বোঝাই যে একজন ব্যক্তির ওজন তার হাইট বা উচ্চতার চেয়ে অনেক বেশি। স্থূলতা বর্তমান নানা ধরনের রোগ এবং সমস্যা লেগেই থাকে। স্থূলতা বা অবেস এর বিএমআই রেঞ্জ 30 বা তার বেশি। স্থূলতার কারণে শারীরিকভাবে অনেক ধরনের জটিল রোগ সৃষ্টি হয়। স্থূলতার কারণে বিশেষ করে কয়েকটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়, যেমন:
- উচ্চ রক্তচাপ
- হৃদরোগ
- স্ট্রোক
- ডায়াবেটিস
- ক্যান্সার
- অস্টিওআর্থারাইটিস
- স্লিপ অ্যাপনিয়া
- মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা
বিএমআই চার্ট
নিচে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রণীত বিএমআই চার্ট দেওয়া হলো:
বিএমআই চার্ট |
এই চার্টের মাধ্যমে খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে BMI এর রেঞ্জ কত থেকে কত হতে পারে শ্রেণীভেদে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান বিএমআই কে আরো আলাদাভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে।
বিএমআই কিভাবে বের করব বা বিএমআই বের করার নিয়ম
বিএমআই মেনুয়ালি চেক করা অনেক সময় সাপেক্ষ এবং বিভ্রান্তকর একটি প্রক্রিয়া। বিএমআই চেক করার জন্য অনেক ধরনের টুলস এর সাহায্য নেয়া হয়। আমরা একটি বিএমআই ক্যালকুলেটরে সাহায্যে খুব সহজেই আমাদের বিএমআই চেক করব। বিএমআই বের করার জন্য নিচের স্টেপগুলো ফলো করুন;
১. প্রথমে বিএমআই ক্যালকুলেটর এই লিংকে চাপ দিন। তাহলে একটি বিএমআই ক্যালকুলেটর ওপেন হবে নিচের মত।
২. বিএমআই ক্যালকুলেটর ওপেন হলে প্রথমেই আপনাকে আপনার বয়স বয়স প্রদান করতে হবে।
৩. এরপর আপনাকে ড্রপ ডাউন থেকে আপনার জেন্ডার সিলেক্ট করতে হবে। আপনি যদি পুরুষ হন তাহলে Male আর যদি মহিলা হন তাহলে Female সিলেক্ট করে দিবেন।
৪. এরপর আপনাকে আপনার উচ্চতা প্রদান করতে হবে। আপনার উচ্চতা কত তা আপনি ফিট ও ইঞ্চি আকারে। প্রদান করতে পারবেন। এখানে আপনি আপনার উচ্চতা প্রদান করবেন।
৫. এরপর আপনাকে আপনার ওজন প্রদান করতে হবে। এখানে আপনি কেজিতে অথবা পাউন্ডে আপনার ওজন প্রদান করতে পারবেন। এখানে আপনার একুরেট ওজন দেয়ার চেষ্টা করবেন।
৬. ওপরে সমস্ত কিছু প্রদান করার পর ক্যালকুলেট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
৭. বুম! নিচে আপনি এখন আপনার বিএমআই দেখতে পারবেন এবং আপনার বর্তমান বিএমআই অবস্থাও দেখতে পারবেন।
ঠিক একই ভাবে আপনি যে কোন ব্যক্তির বিএমআই চেক করতে পারবেন সম্পূর্ণ ফ্রিতে এবং সবথেকে সহজ উপায়।
উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বের করার নিয়ম
দৈহিক উচ্চতা | আদর্শ ওজন (পুরুষ) | আদর্শ ওজন (নারী) |
---|---|---|
৪ ফুট ৬ ইঞ্চি | ২৮ থেকে ৩৫ কেজি | ২৮ থেকে ৩৫ কেজি |
৪ ফুট ৭ ইঞ্চি | ৩০ থেকে ৩৯ কেজি | ৩০ থেকে ৩৭ কেজি |
৪ ফুট ৮ ইঞ্চি | ৩৩ থেকে ৪০ কেজি | ৩২ থেকে ৪০ কেজি |
৪ ফুট ৯ ইঞ্চি | ৩৫ থেকে ৪৪ কেজি | ৩৫ থেকে ৪২ কেজি |
৪ ফুট ১০ ইঞ্চি | ৩৮ থেকে ৪৬ কেজি | ৩৬ থেকে ৪৫ কেজি |
৪ ফুট ১১ ইঞ্চি | ৪০ থেকে ৫০ কেজি | ৩৯ থেকে ৪৭ কেজি |
৫ ফুট | ৪৩ থেকে ৫৩ কেজি | ৪০ থেকে ৫০ কেজি |
৫ ফুট ১ ইঞ্চি | ৪৫ থেকে ৫৫ কেজি | ৪৩ থেকে ৫২ কেজি |
৫ ফুট ২ ইঞ্চি | ৪৮ থেকে ৫৯ কেজি | ৪৫ থেকে ৫৫ কেজি |
৫ ফুট ৩ ইঞ্চি | ৫০ থেকে ৬১ কেজি | ৪৭ থেকে ৫৭ কেজি |
৫ ফুট ৪ ইঞ্চি | ৫৩ থেকে ৬৫ কেজি | ৪৯ থেকে ৬০ কেজি |
৫ ফুট ৫ ইঞ্চি | ৫৫ থেকে ৬৮ কেজি | ৫১ থেকে ৬২ কেজি |
৫ ফুট ৬ ইঞ্চি | ৫৮ থেকে ৭০ কেজি | ৫৩ থেকে ৬৫ কেজি |
৫ ফুট ৭ ইঞ্চি | ৬০ থেকে ৭৪ কেজি | ৫৫ থেকে ৬৭ কেজি |
৫ ফুট ৮ ইঞ্চি | ৬৩ থেকে ৭৬ কেজি | ৫৭ থেকে ৭০ কেজি |
৫ ফুট ৯ ইঞ্চি | ৬৫ থেকে ৮০ কেজি | ৫৯ থেকে ৭২ কেজি |
৫ ফুট ১০ ইঞ্চি | ৬৭ থেকে ৮৩ কেজি | ৬১ থেকে ৭৫ কেজি |
৫ ফুট ১১ ইঞ্চি | ৭০ থেকে ৮৫ কেজি | ৬৩ থেকে ৭৭ কেজি |
৬ ফুট | ৭২ থেকে ৮৯ কেজি | ৬৫ থেকে ৮০ কেজি |
বিএমআই-এর লিমিটেশন বা সীমাবদ্ধতা
বিএমআই একজন মানুষের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বের করার একটি সহজ প্রক্রিয়া। বর্তমান সময়ে বিএমআই ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তবে বিএমআই পরিমাপের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নিচে কিছু BMI এর উল্লেখযোগ্য লিমিটেশন বা সীমাবদ্ধতা দেয়া হলো;
- শরীরের চর্বির পরিমাণ সরাসরি পরিমাপ করে না
- মাসকিউলার ব্যক্তির জন্য ভুল ফলাফল দিতে পারে
- বয়স্কদের জন্য সঠিক নাও হতে পারে
- গর্ভবতী মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য নয়
- নির্দিষ্ট শারীরিক অবস্থার জন্য ভুল ফলাফল দিতে পারে
- শরীরের চর্বি বিতরণ বিবেচনা করে না
- জাতিগত পার্থক্য
বিএমআই ঠিক রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
আপনার বিএমআই যদি অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার মধ্যে পড়ে অথবা কম ওজন হয়, তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের ইমপ্রুভমেন্টের জন্য অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস থাকলো আপনাদের জন্য যেগুলো ফলো করলে আপনি আপনার BMI কে হেলদি রাখতে পারবেন।
1. নিয়মিত সুষম খাবার খাওয়া:
নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল, শাকসবজি এবং সুষম খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এছাড়াও চর্বিযুক্ত গোশত, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং চিনিযুক্ত পানীয়, জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলতে হবে। আর অবশ্যই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন। আর চেষ্টা করবেন সব সময় অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলার।
2. নিয়মিত ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম করার
প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে 150 মিনিট কঠোর ব্যায়াম করার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে যেই এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম একটু বেশি কঠিন সেই ব্যায়াম গুলোকে বেশি করার। এর পাশাপাশি নিয়মিত হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, বা সাইকেল চালানোর মতো ব্যায়াম করতে হবে। ফিজিক্যালি এক্টিভ থাকার জন্য নিয়মিত জীবনে লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন এবং এর পাশাপাশি ধর্মীয় বিষয়গুলোতে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবেন।
3. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন:
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে আপনার শরীর ঠিক রাখার জন্য। কমপক্ষে প্রতি রাতে 7-8 ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। ঘুমের অভাব ওজন বৃদ্ধির সাথে খুবই ওতপ্রুতভাবে জড়িত। নিয়মিত ঘুমের সিডিউল বজায় রাখুন এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন হেডফোন কিংবা ব্লুটুথ ব্যবহার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে।
4. মানসিক চাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন:
আপনি কি জানেন মানসিক চাপ ওজন বৃদ্ধির সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। নামাজ, ইয়োগা এর মতো গুরুত্বপূর্ণ টেকনিকগুলো ব্যবহার করে মানসিক চাপ কমাতে পারেন। আর যারা ইসলাম ধর্মে আমরা চলার চেষ্টা করি তারা নিয়মিত নামাজ পড়ার চেষ্টা করবেন এতে করে আপনার মানসিক চাপ অনেক কমে যাবে। আর আপনার উল্লেখযোগ্য মানসিক চাপের কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোকে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।
5. ধূমপান ত্যাগ করুন:
ধূমপান ওজন বৃদ্ধির সাথে অনেক গভীরভাবে জড়িত।আপনি যদি ধূমপান করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ধূমপান ত্যাগ করার চেষ্টা করবেন। ধূমপান ত্যাগ করলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার হবে ডাইরেক্ট এবং ইনডাইরেক্টলি।
6. অ্যালকোহল পান করা থেকে এগিয়ে চলুন
প্রথমেতে ইসলাম ধর্মের অ্যালকোহল সরাসরি নিষিদ্ধ। এছাড়াও অ্যালকোহলে প্রচুর পরিমাণে চিনি ও ক্যালোরি থাকে। যা আপনার শরীরকে অসুস্থ করতে এবং আপনার ওজন বাড়াতে খুব বড় ভূমিকা রাখে। অ্যালকোহল পান করা থেকে এড়িয়ে চললে আপনার শারীরিকভাবে অনেক উন্নতি হবে এবং আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে।
7. নিয়মিত আপনার ওজন চেক করা:
নিয়মিত ওজন চেক করার মাধ্যমে আপনি আপনার ওজনের উপর নজর রাখতে পারবেন। কখনো যদি আপনার ওজন বৃদ্ধি পায়, তাহলে আপনার খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামের রুটিন পরিবর্তন করে নিজেকে সুস্থ রাখতে পারবেন। আর এছাড়াও এক্সপার্টরা এ বিষয়টাকে অনেক গুরুত্ব দেয়।
8. একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন:
একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে সবসময় সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করবেন। বিশেষ করে আপনার যদি ওজন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের কাছে সরাসরি পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। একজন ভালো মানে ডাক্তার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনেক বড় বড় ভূমিকা রাখে।
বিএমআই ঠিক রাখার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর লাইফ স্টাইলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। উপরে উল্লেখিত টিপসগুলো ফলো করে আপনি আপনি চাইলে আপনার বিএমআই ঠিক রাখতে এবং আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারবেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
বিএমআই কত হলে স্বাভাবিক?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, 18.5 থেকে 24.9 এর মধ্যে বিএমআই স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়।
একজন পুরুষের জন্য 23 BMI ভাল?
হ্যাঁ, এটি স্বাভাবিক
BMI কমাতে কত সময় লাগবে?
বিএমআই কমাতে কত সময় লাগবে তা নির্ভর করে আপনার বর্তমান ওজন, আপনার টার্গেট এবং আপনি কতটা পরিশ্রম করছেন তার উপর। ধীরে ধীরে ওজন কমানো (প্রতি সপ্তাহে 1-2 পাউন্ড) দীর্ঘমেয়াদে ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর।
বিএমআই কমাতে কোন ঔষধ আছে কি?
কিছু ঔষধ আছে যা বিএমআই কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, ঔষধ ব্যবহারের আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
উপসংহার
বর্তমান সময়ে একজন মানুষের স্বাভাবিক ওজন ধরে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন মানুষ এর ওজন তার উচ্চতা অনুযায়ী ঠিক আছে কিনা সেটা জানার জন্য BMI ব্যবহার করা হয়। একজন ব্যক্তি স্বাভাবিক ওজনের হয়ে থাকলে তুলনামূলকভাবে অধিক ওজন এবং কম ওজন ব্যক্তির তুলনায় কম অসুস্থ হয় বলে প্রমাণিত।
বিএমআই পরিমাপ করা খুবই সহজ তবে আপনি যদি ম্যানুয়ালি করতে যান সে ক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আর আপনি যদি কোন ক্যালকুলেটর ইউজ করেন সেক্ষেত্রে আপনি দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনার বিএমআই নির্ণয় করতে পারবেন।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিএমআই কি এবং বিএমআই কিভাবে বের করব সহ বিএমআই সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস এবং বিএমআই এর শ্রেণীবিভাগ গুলোকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। তো আজকের এই আর্টিকেল এই পর্যন্তই। আপনি চাইলে নিচের আর্টিকেলগুলো পড়ে নিতে পারেন!
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.